সুশাসন (350 টি প্রশ্ন )
- ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’ (National Integrity Strategy) হলো রাষ্ট্র ও সমাজে সততা ও নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রণীত একটি কৌশলপত্র।
- এই কৌশলে বিশ্বাস করা হয় যে, সর্বস্তরে শুদ্ধাচার চর্চা এবং দুর্নীতিরোধের মাধ্যমেই কেবল সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব, যা শেষ পর্যন্ত ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করবে।
- তাই জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলে ‘সোনার বাংলা’ গড়ার প্রত্যয়টি সরাসরি সুশাসন প্রতিষ্ঠার সাথে সম্পর্কিত।
- সুশাসন বা গুড গভর্নেন্স-এর অন্যতম প্রধান শর্ত হলো আইনের শাসন ও জবাবদিহিতা।
- বিচার বিভাগ যদি স্বাধীন না থাকে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না হয়, তবে দুর্নীতিবাজ বা অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায় না।
- প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুর্নীতি দমনের জন্য স্বাধীন বিচার বিভাগ ও আইনের শাসন অপরিহার্য।
নাগরিকের সামাজিক অধিকার হলো সেই অধিকার যা মানুষকে সমাজে মর্যাদা, নিরাপত্তা এবং সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করে।

A) ভোটাধিকার → রাজনৈতিক অধিকার
B) সম্পত্তির অধিকার → অর্থনৈতিক অধিকার
C) পরিবার গঠনের অধিকার → সামাজিক অধিকার
D) চাকরির সাংবিধানিক অধিকার → রাজনৈতিক/অর্থনৈতিক অধিকার
সুশাসনকে গতিশীলতা দান করার মূল চালিকাশক্তিই হলো জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ। এর কারণগুলো হলো:

জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ: যখন জনগণ শাসন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে, তখন তারা সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন করতে পারে এবং সরকারকে তাদের কাজের জন্য জবাবদিহি করতে বাধ্য করে। এই জবাবদিহিতার চাপ সরকারকে ক্রমাগত সক্রিয় এবং সচল রাখে।
চাহিদা ও প্রয়োজনের প্রতিফলন: জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সরকার সাধারণ মানুষের প্রকৃত চাহিদা, সমস্যা এবং আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে জানতে পারে। এর ফলে সরকার সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত নীতি গ্রহণ করতে পারে, যা শাসনব্যবস্থাকে গতিশীল করে তোলে।
স্বচ্ছতা বৃদ্ধি: জনগণের অংশগ্রহণ সরকারকে স্বচ্ছ হতে বাধ্য করে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জনগণের সম্পৃক্ততা দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি কমিয়ে আনে এবং শাসনব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করে তোলে।
উদ্ভাবন ও অভিযোজন: পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য নতুন ধারণা ও সমাধানের প্রয়োজন হয়। জনগণের কাছ থেকে আসা মতামত ও পরামর্শ সরকারকে নতুন পথে ভাবতে এবং উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে পেতে সহায়তা করে, যা সুশাসনকে গতিশীল রাখে।
- বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বারবার কোনাবল প্রথম সুশাসন (Good Governance) শব্দটি ব্যবহার করেন।
- সুশাসনের ধারণাটি বহুমাত্রিক।
- সুশাসন ধারণাটির উদ্ভাবক বিশ্বব্যাংক।
- বিশ্বব্যাংক ১৯৮৯ সালে প্রথম সুশাসন প্রত্যয়টি ব্যবহার করে।
- সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সর্বাধিক ভূমিকা রাখতে পারে রাজনৈতিক নেতৃত্ব।
- সুশাসনের এই শর্ত পূরণে রাজনৈতিক নেতৃত্বই সর্বাধিক ভূমিকা রাখতে পারে।
- জন অস্টিনের মতে আইনের উৎস ১টি।
যথা:
১. সার্বভৌমের আদেশ।

- অধ্যাপক হল্যান্ডের মতে আইনের উৎস ৬টি।
যথা:
১. প্ৰথা,
২. ধর্ম,
৩. বিচারকের রায়,
৪. ন্যায়বিচার,
৫. বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা,
৬. আইনসভা।

- ওপেনহাইমের মতে আইনের উৎস ৭টি।
যথা:
১. প্ৰথা,
২. ধর্ম,
৩. বিচারকের রায়,
৪. ন্যায়বিচার,
৫. বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা,
৬. আইনসভা,
৭. জনমত।
- "পলিটিক্যাল ম্যান" গ্রন্থের লেখক হলেন সেমুর মার্টিন লিপসেট।
- বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬০ সালে এবং পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে সংশোধিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়।
- গ্রন্থটি তার রাজনৈতিক সমাজবিজ্ঞানের বিশ্লেষণ ও তাত্ত্বিক গুরুত্বের জন্য আমেরিকান সোসিওলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সম্মানজনক ম্যাকআইভার পুরস্কার অর্জন করে।
সুশাসনের প্রভাব-
১। সংবিধান সুউচ্চকরণ,
২। প্রশাসনে স্বচ্ছতা আনায়ন,
৩। আর্থসামাজিক উন্নয়ন,
৪। জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ,
৫। মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ,
৬। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা,
৭। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বৃদ্ধি,
৮। দক্ষতা বৃদ্ধি,
৯। অর্থনৈতিক উন্নয়ন,
১০। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা,
১১। দুর্নীতিরোধ,
১২। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।
- বিশ্বব্যাংক ১৯৯২ সালে সুশাসনের সংজ্ঞা প্রদান করে।
- বিশ্বব্যাংক ধারণা পোষণ করে: 'সুশাসনের ফলে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পদগুলোর টেকসই উন্নয়ন ঘটে থাকে।'

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
- 'আইনের চোখে সকলেই সমান' এটিই হচ্ছে আইনগত সাম্যের মূল কথা। সমাজে যখন বৈষম্যমূলক আইন থাকে না, সকল মানুষের আইনের আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ থাকে তখনই আইনগত সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
- আইনের অনুশাসন অর্থাৎ বিনা অপরাধে গ্রেফতার এবং বিনাবিচারে আটক না রাখার বিধান কার্যকর হলে আইনগত সাম্য প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।
- একটি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রণীত আইন মেনে চলা নাগরিকের অন্যতম প্রধান কর্তব্য।
- এই আনুগত্য রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকদের সমর্থন এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ইঙ্গিত দেয়।
- আইন মেনে চলার মাধ্যমে নাগরিকরা রাষ্ট্রের প্রতি তাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করে থাকে।
- এটি নাগরিকদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এবং দায়বদ্ধতার একটি রূপ।
- রাশিয়ায় 'এক দেশ ভিত্তিক সমাজতন্ত্র' (Socialism in One Country) নীতির প্রবর্তক ছিলেন স্ট্যালিন ।
- লেনিন এবং ট্রটস্কি প্রাথমিকভাবে বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব বিপ্লব ছাড়া সমাজতন্ত্র টিকে থাকতে পারবে না।
- তাদের মতে, রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সাফল্য নির্ভর করবে অন্যান্য উন্নত পুঁজিপতি দেশগুলোতেও সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটার ওপর।
- তবে, লেনিনের মৃত্যুর পর এবং বিশ্ব বিপ্লবের প্রত্যাশিত সূচনা না হওয়ায়, স্ট্যালিন 'এক দেশ ভিত্তিক সমাজতন্ত্র' নীতি উত্থাপন করেন।
- এই নীতির মূল ধারণা ছিল যে সোভিয়েত ইউনিয়ন এককভাবে, অন্যান্য দেশের বিপ্লবের জন্য অপেক্ষা না করে, নিজেদের মধ্যেই সমাজতন্ত্র গড়ে তুলতে সক্ষম।
- এর অর্থ ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন এবং ক্ষমতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া, যার মধ্যে ছিল শিল্পায়ন, কৃষির সমষ্টিকরণ (collectivization) এবং দেশের প্রতিরক্ষা জোরদার করা।
- এই নীতি ট্রটস্কির 'স্থায়ী বিপ্লব' (Permanent Revolution) ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল, যা বিশ্বজুড়ে বিপ্লবের ধারাবাহিকতাকে অপরিহার্য মনে করত।
- স্ট্যালিনের এই নীতিই শেষ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রীয় মতাদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
সঠিক উত্তর:
C) একটিতে নৈতিকতা, অপরটিতে রাজনৈতিক দর্শন থাকে

মূল্যবোধ শিক্ষা (Values Education) এবং সুশাসনের (Good Governance) মধ্যে মৌলিক পার্থক্য:

মূল্যবোধ শিক্ষা ব্যক্তির নৈতিক, সামাজিক ও মানবিক গুণাবলির বিকাশে কাজ করে। এটি মূলত:
ব্যক্তির আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে নৈতিক ভিত্তি তৈরি করে।
উদাহরণ: সততা, সহনশীলতা, সম্মানবোধ ইত্যাদি।

সুশাসন একটি প্রাতিষ্ঠানিক ও রাজনৈতিক কাঠামো যা রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে। এটি মূলত:
সরকার, প্রতিষ্ঠান ও নীতিমালার কার্যকারিতার সাথে সম্পর্কিত।
উদাহরণ: আইনের শাসন, দুর্নীতি দমন, জনগণের অংশগ্রহণ ইত্যাদি।
উৎপত্তিগত অর্থে "আমলাতন্ত্র" (Bureaucracy) শব্দটি এসেছে ফরাসি শব্দ "Bureau" থেকে, যার অর্থ "ডেস্ক" বা "টেবিল", এবং গ্রিক শব্দ "Kratos" থেকে, যার অর্থ "শাসন" বা "ক্ষমতা"।

- আমলাতন্ত্র শব্দটি মূলত ডেস্ক বা টেবিল থেকে শাসন করার ধারণা বোঝায়।
- আমলাতন্ত্রে প্রশাসনিক কাজগুলো সাধারণত অফিস বা ডেস্কে বসে করা হয়, তাই এটি Desk Government নামে পরিচিত।
- "Desk Government" বলতে বোঝায় একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা যেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং প্রশাসনিক কাজগুলো অফিসিয়াল ডেস্ক বা টেবিলের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

অতএব, উৎপত্তিগত অর্থে আমলাতন্ত্রকে "Desk Government" বলা হয়।
- ১৮৬১ সালে ভারতীয় পুলিশ আইন পাসের মাধ্যমে লর্ড ক্যানিং ভারত উপমহাদেশে প্রথম পুলিশ ব্যবস্থা চালু করেন ।
- ১৭৯৩ সালে ‘ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত' ব্যবস্থার প্রবর্তক হলেন লর্ড কর্নওয়ালিস ।
- দ্বৈত শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তক হিসেবে পরিচিত লর্ড ক্লাইভ ।
- ১৮২৯ সালে সতীদাহ প্রথা রহিত ঘােষণা করার জন্য লর্ড বেন্টিঙ্ক নামটি সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্রশংসিত ।
মানুষ তার জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ উপাদান পরিবেশ থেকে পায়। এখানে কিছু কারণ তুলে ধরা হলো:

- পরিবেশ হলো সেই উৎস, যা থেকে মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ, যেমন: পানি, বায়ু, খাদ্য, উদ্ভিদ, এবং প্রাণী পায়।
- প্রাকৃতিক সম্পদগুলি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। উদাহরণস্বরূপ, অক্সিজেন সঞ্চালনের জন্য বায়ু, খাদ্য উৎপাদনের জন্য মাটি এবং পানি।
- পরিবেশ মানুষকে বাসস্থান, নির্মাণ উপকরণ এবং জ্বালানি সরবরাহ করে, যা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।
- পরিবেশের সাথে সঠিক সম্পর্ক বজায় রেখে মানুষ তার জীবনধারণের চাহিদা পূরণ করতে পারে।

এ কারণে, প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো পরিবেশ থেকে
অনিয়ন্ত্রিত আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত কারণ এটি গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। নিচে এর কারণগুলো তুলে ধরা হলো:

- জনগণের অংশগ্রহণ কমে যায়: অনিয়ন্ত্রিত আমলাতন্ত্র জনগণের মতামত এবং অংশগ্রহণকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।

- ক্ষমতার অপব্যবহার: আমলারা যদি নিয়ন্ত্রণহীন হয়, তবে তারা নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারে, যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাকে ক্ষুণ্ন করে।

- নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি: অনিয়ন্ত্রিত আমলাতন্ত্র নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় জটিলতা ও বিলম্ব সৃষ্টি করতে পারে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর।

- দুর্নীতির সম্ভাবনা বৃদ্ধি: নিয়ন্ত্রণহীন আমলাতন্ত্র দুর্নীতি বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করে, যা গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি ও মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক।

এই কারণগুলো বিবেচনা করে বলা যায় যে, অনিয়ন্ত্রিত আমলাতন্ত্র গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ এবং এটি নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি।
- Governance হল একটি বহুমাত্রিক ধারণা যা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ, ক্ষেত্র এবং প্রেক্ষাপট থেকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
- Governance শব্দটি এসেছে ‘‘kubernao’’ নামক ল্যাটিন শব্দ থেকে, যার অর্থ পরিচালনা করা।
 
- According to Oxford Dictionary: Middle English: from Old French, from governer, from Latin gubernare 'to steer, rule', from Greek kubernan 'to stee মূল উৎপত্তি গ্রিক শব্দ kubernan থেকে। 
- উল্লেখ্য, উচ্চমাধ্যমিক পৌরনীতি ও সুশাসন, প্রথম পত্র বইয়ে শব্দটি ল্যাটিন ভাষা থেকে উৎপন্ন বলা হয়েছে, যা ভুল৷ 
- ল্যাটিন ভাষায় গ্রীক ভাষা থেকে এসেছে। 
- Good Governance শব্দটির অর্থ- কার্যকর শাসন। 
- ইংরেজি Good Governance শব্দের বাংলা অর্থ সুশাসন। সুশাসনের ধারণাটি বহুমাত্রিক। 
- সুশাসন অর্থ হচ্ছে নির্ভুল, দক্ষ ও কার্যকরী শাসন। 
- সুশাসন ধারণাটির উদ্ভাবক বিশ্বব্যাংক। 
- বিশ্বব্যাংক ১৯৮৯ সালে প্রথম সুশাসন প্রত্যয়টি ব্যবহার করেন।
 
তবে পাঠ্য বইয়ে যেহেতু ল্যাটিন দেওয়া আছে, এটাই সঠিক উত্তর হিসেবে ধরে নেওয়া উচিত। 
 

- যে শাসন ব্যবস্থায় আইনের শাসন, দায়িত্বশীলতা, জবাবদিহিতা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং জনগণের অংশগ্রহণ গণতান্ত্রিক উপায়ে নিশ্চিত করে তাকে সুশাসন বলে। 
- সুশাসনের মূলভিত্তি আইনের শাসন। এটি একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ও বৈধ উপকরণ। 
- একটি দেশের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আইনের শাসন থাকা দরকার কারণ এর মাধ্যমে স্বেচ্ছাচারি ক্ষমতা ও আধিপত্য রোধ করা যায়।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন


- সুশাসন হলো ন্যায়নীতি অনুসারে সুষ্ঠভাবে, নিরপেক্ষভাবে ও উত্তমরূপে দেশ বা রাষ্ট্র পরিচালনা।
- এটি একটি সামাজিক ধারণা, যা রাষ্ট্রের সুশাসন, ন্যায়পরায়ণতা ও জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করে।
- সুশাসনের মূলনীতি হলো অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ, দায়িত্বশীল ও ন্যায়সংগত প্রশাসন, যা আইনের শাসন নিশ্চিত করে।
- সুশাসন রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের সম্পর্ক, সরকারের সাথে জনগণের সংযোগ, শাসকের সাথে শাসিতের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া বোঝায়।
- বিশ্বব্যাংকের ব্যর্থতা বিশেষ করে ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হওয়ার পর, ১৯৮৯ সালে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক সুশাসনের ধারণা উদ্ভূত হয়।
- আশির দশকের দ্বিতীয়ার্ধে বিশ্বব্যাংক সুশাসনকে উন্নয়নের এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করে, যা বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন নামে পরিচিত।
- সরকার ও জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হওয়ার ফলে, উভয়েই এতে লাভবান হয়, তাই সুশাসনকে ‘Win-Win Game’ বলা হয়।

রাষ্ট্র গঠনের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো সরকার। সরকার রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি। সরকারের তিনটি বিভাগ রয়েছে।
যথাঃ
- আইন বিভাগ,
- শাসন বিভাগ ও
- বিচার বিভাগ।
আইন বিভাগঃ
ক) আইন প্রণয়ন, পরিবর্ধন, সংশোধন করে। [সংবিধানের ৬৫(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে আইন প্রণয়ন ক্ষমতা সংসদের উপর ন্যস্ত]
খ) সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে। [ #অনুচ্ছেদ ৫৫(৩) অনুসারে মন্ত্রিসভা যৌথ ভাবে সংসদের নিকট দায়ী থাকবে]
গ) কিছু কিছু নির্বাচনমূলক কাজ। [ #অনুচ্ছেদ ৪৮(১) অনুসারে রাষ্ট্রপতি, #অনুচ্ছেদ ৭৪(১) অনুসারে স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার নির্বাচন ইত্যাদি ]

∎ নিচের তথ্যগুলো জেনে রাখুনঃ
• আইন ও অধ্যাদেশের মধ্যে পার্থক্যঃ
আইন- সংসদে বিল আকারে যে প্রস্তাব পাশ হয় তা-ই হল আইন।
অধ্যাদেশ- দেশে যখন কোন জরুরি অবস্থা চলতে থাকে এবং আইন পাশ করার দরকার পরে কিন্তু সংসদের কোনো অধিবেশন থাকে না তখন প্রেসিডেন্টের মুখ নি:সৃত বাণীকেই অধ্যাদেশ বলে।কিন্তু পরবর্তী সংসদ অধিবেশন শুরু হবার ৩০ দিনের মধ্যে অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করতে হয় নতুবা তা বাতিল হয়ে যায়।

• পরিচালক ও মহাপরিচালকের মধ্যে পার্থক্যঃ
পরিচালক - পরিচালক একজন উপসচিব সমমর্যাদা সম্পন্ন সরকারি কর্মকর্তা।
মহাপরিচালক - মহাপরিচালক একজন অতিরিক্ত সচিব অথবা যুগ্ম সচিবেরর সমমর্যাদা সম্পন্ন সরকারি কর্মকর্তা। মহাপরিচালক সাধারণত অধিদপ্তরের প্রধানের দায়িত্ব থাকেন।যেমন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ইত্যাদি।
- সুশাসনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম । অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ করতে যে সকল বাধা-বিপত্তি যেমন- কালো বাজারি, মজুদদারী, একচেটিয়া কারবার প্রভৃতি দূর হয় ।
- নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হয় , যারা তাদের উদ্ভাবনী শক্তি প্রয়োগের সুযোগ পায় । ফলে দেশের সার্বিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায় ।
- অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে দুর্নীতি দূর হবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে একথা বলা যাবে না কারণও এ দুটি বিষয় অনেক ব্যাপক ।
- দুর্নীতি আর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারটি কেবল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের সাথে জড়িত নয় ।
- কর্মক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত স্বার্থ (পরিবার, বন্ধুত্ব, আর্থিক, সামাজিক) যখন তার পেশাগত দায়িত্বের সাথে বিরোধী হয় তখন তাকে স্বার্থের সংঘাত বলে।
- এটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বার্থের সাথে সম্পর্কিত।

উদাহরণ হিসেবেঃ
- একজন শিক্ষক তার নিজের সন্তানকে অন্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করলে।
- একজন সাংবাদিক তার নিজের ব্যবসার প্রচার করার জন্য তার নিবন্ধ ব্যবহার করলে।
- ''Rule of Law” অর্থাৎ “আইনের শাসন” একটি মৌলিক গণতান্ত্রিক নীতি, যা বলে যে সমাজে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়—চলুন সে সাধারণ নাগরিক হোক বা রাষ্ট্রপ্রধান। এই নীতির প্রধান উদ্দেশ্য হলো সকল নাগরিককে আইনসম্মতভাবে সমান মর্যাদা ও অধিকার দেওয়া এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহার রোধ করা।

আইনের শাসনের মূল ভিত্তিগুলো হলো:
- আইনের শাসনের সর্বজনীনতা: প্রত্যেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সরকার আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
- আইনের সামনে সমতা: ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বা সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সবাই আইনসন্মতভাবে সমান।
- স্বাধীন বিচারব্যবস্থা: আইন প্রয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকবে না।

- এই নীতির মাধ্যমে সুশাসনের নিশ্চিত হয়, কারণ এতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং ন্যায়বিচারের পরিবেশ গড়ে ওঠে। রাষ্ট্র যদি এই নীতিতে অটল থাকে, তবে নাগরিকরা আইনের প্রতি আস্থা রাখতে পারে এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাও স্থিতিশীল হয়।
- অমর্ত্য সেন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ Development as Freedom-এ উন্নয়নকে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মানদণ্ডে বিচার না করে, মানবিক সক্ষমতা ও স্বাধীনতার দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতে, প্রকৃত উন্নয়ন তখনই ঘটে যখন ব্যক্তি নানাবিধ নিরবচ্ছিন্ন স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারে।

এই বইয়ে তিনি পাঁচটি "instrumental freedoms" বা কার্যকর স্বাধীনতার কথা বলেছেন, যা সুশাসনের ভিত্তি তৈরি করে। এগুলো হলো:
- রাজনৈতিক স্বাধীনতা (political freedoms)
- অর্থনৈতিক সুবিধা বা সুযোগ (economic facilities)
- সামাজিক সুযোগ (social opportunities)
- স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা (transparency guarantees)
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা (protective security)

- এই উপাদানগুলো পরস্পরের পরিপূরক এবং একটি উন্নত ও ন্যায্য সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত। সুতরাং, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা বহুজাতিক বিনিয়োগ নয়, বরং রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক সুযোগ এবং স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতাই সুশাসনের ভিত্তি হিসেবে অমর্ত্য সেন গুরুত্ব দিয়েছেন।
- জন স্টুয়ার্ট মিল (John Stuart Mill) ছিলেন উনিশ শতকের একজন বিখ্যাত ইংরেজ দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ এবং সমাজ চিন্তাবিদ। তিনি উদারতান্ত্রিকতা (liberalism) ও গণতন্ত্র বিষয়ে অগ্রগামী চিন্তাভাবনার জন্য খ্যাত।
- ''Considerations on Representative Government” (১৮৬১) বইতে মিল প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের কাঠামো ও কার্যকারিতা নিয়ে বিশ্লেষণ করেন। সেখানে তিনি বলেন, গণতন্ত্র তখনই সফল হবে যদি তিনটি মৌলিক শর্ত পূরণ হয়:

সচেতনতা (Awareness) জনগণকে নিজের অধিকারের বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

অংশগ্রহণ (Participation) সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে হবে, শুধু ভোট দিয়ে নয়—চিন্তাভাবনার মাধ্যমেও।

জবাবদিহিতা (Accountability) রাষ্ট্র ও শাসকদের প্রতিটি কাজের জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

- জন স্টুয়ার্ট মিল মনে করতেন, “The worth of a state in the long run is the worth of the individuals composing it.”

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
- ১৯৮০ এর দশকে আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের দেশগুলিকে বিশ্ব ব্যাংকের দেওয়া ঋণ কার্যক্রমে সফলতা না আসায় ১৯৮৯ সালে বিশ্বব্যাংক ঋণ সহায়তা প্রাপ্তির জন্য আফ্রিকার দেশগুলিকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার শর্ত আরোপ করে।
- কারণ, বিশ্বব্যাংক সুশাসনকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পদ গুলোর টেকসই উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার মনে করে।
- বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ প্রাপ্তির শর্ত হিসাবে ১৯৮৯ সালে বিশ্বব্যাংক ‘সুশাসন’ প্রত্যয়টি প্রবর্তন করেন।
সঠিক উত্তর: 0 | ভুল উত্তর: 0