বাঙালি জাতির উদ্ভব ঘটেছে প্রায় ৬-৭ হাজার বছর পূর্বে। এ অঞ্চলে প্রথম আসে নিগ্রপ্রতিম খর্বাকায় মানুষ, যাদেরকে নেগ্রিটো বলা হয়। তারপর বিভিন্ন জাতি বর্ণের মিশ্রণে সৃষ্টি হয় সমগ্র বাঙালি জাতি। সমগ্র বাঙালি জাতিকে মোটাদাগে দুভাগে ভাগ করা যায়।
প্রাক আর্য নরগোষ্ঠিকে আবার চারটিভাগে ভাগ করা যায়
অস্ট্রিকঃ মনে করা হয় যে, বাংলার প্রাচীন জনগুলির মধ্যে অষ্ট্রিক ভাষীরাই সবচেয়ে বেশি। প্রায় ৫-৬ হাজার বছর পূর্বে ইন্দোচীন থেকে বাংলায় প্রবেশে করে অস্ট্রিক জাতি। তারা নেগ্রিটোদের পরাজিত করে। বাংলাদেশের সাঁওতাল, বাঁশফোড়, রাজবংশী প্রভৃতি আদি অষ্ট্রেলীয়দের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও লাওস এই তিনটি দেশকে একত্রে ইন্দোচীন বলা হয়। অস্ট্রিক জাতি সর্বপ্রথম এ দেশে কৃষি কাজ শুরু করে
দ্রাবিড়ঃ অস্ট্রিক জাতির সমকালে বা কিছু পরে বাংলায় প্রবেশ করে দ্রাবিড় জাতি। তারা আসে খাইবার গিরিপথ দিয়ে। সভ্যতায় তারা অস্ট্রিক জাতি থেকে উন্নত বলে, অস্ট্রিককদের উপর প্রভাব বিস্তার করে।
মঙ্গোলীয়ঃ এর কিছু কাল পরে(প্রায় ৫ হাজার বছর পূর্বে) উত্তর পূর্বাঞ্চল দিয়ে আগমন ঘটে মঙ্গোলীয়দের। গারো, চাকমা, ত্রিপুরা, কোচ প্রভৃতি উপজাতি এ জনগোষ্ঠী ভূক্ত। বাংলাদেশে বসবাসকারী উপজাতীয়দের বড় অংশ হচ্ছে মঙ্গলয়েড।
আর্য জনগোষ্ঠীঃ খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে আফগানিস্তানের খাইবার গিরিপথ দিয়ে ককেশীয় অঞ্চলের শ্বেতকায় আর্যগোষ্ঠী ভারতবর্ষে প্রবেশ করে। উপমহাদেশে আগমনের অন্তত চৌদ্দশত বছর পর, অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকে বঙ্গ ভূখণ্ডে আর্যদের আগমন ঘটে। এদ্দেশে আর্যদের আগমনের পূর্বে এ অঞ্চলের স্থানীয় অন্ত্যজ ডোম, চণ্ডাল, হাড়ি, কোল সম্প্রদায়ের বসবাস ছিল। স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আর্যগণ সাফল্য লাভ করে এবং বঙ্গ ভূখণ্ড দখল করে নেয়। পরবর্তীতে এরা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে যায়। এভাবে আর্য ও অনার্য আদিম অধিবাসীদের সংমিশ্রোণে এক নতুন জাতির উদ্ভব হয়- বাঙালি জাতি।
সংক্ষেপে বললেঃ