জন্ম : ১৫ আগস্ট ১৯২২ মৃত্যু : ১০ অক্টোবর ১৯৭১ বাংলা সাহিত্যের এক প্রবাদপ্রতিম নক্ষত্রের নাম সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বাংলাদেশের সাহিত্যে তিনি পথ দেখিয়েছে তুলেছেন স্বতন্ত্র এক ভাষারীতি। যে ভাষা, যে কাহিনি বিন্যাস, চরিত্রের সৃষ্টির সাথে আর কোনো ভাষা সাহিত্যিকের সাহিত্য কর্মের মিল পাওয়া যায় না। ধর্মীয় গোঁড়ামি, ভণ্ডামি, কুসংস্কারকে ব্যবচ্ছেদ করেছেন তিনি তার লেখায়। পেশায় কূটনীতিক হলেও একাধারে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ছিলেন সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী, ভাস্কর ও সাংবাদিক। তার হাতে জন্ম নিয়েছে ‘লালসালু’, ‘কাঁদো নদী কাঁদো', 'চাঁদের অমাবস্যা'র মতো উপন্যাস, 'নয়নচারা', 'দুই তীর’ ও ‘অন্যান্য গল্প' এর মতো গল্পগ্রন্থ কিংবা ‘বহিপীর’ এর মতো নাটকের জন্ম। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহকে বলা যায় বাংলাদেশের সাহিত্যে আধুনিক গদ্যের জনক। চট্টগ্রামের ষোলশহরে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ জন্মগ্রহণ করেন। বাবা সৈয়দ আহমাদুল্লাহ ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা, মা নাসিম আরা খাতুনও ছিলেন সমতুল্য উচ্চশিক্ষিত ও রুচিশীল পরিবার থেকে উঠে আসা। ১৯৩৯ সালে কুড়িগ্রাম হাই স্কুল থেকে এন্ট্রান্স ও ১৯৪১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাশ করেন তিনি। পরে ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ থেকে ১৯৪৩ সালে ডিসটিঙ্কশনসহ বিএ পাশ করেন এ সাহিত্যিক। ১৯৪৫ সালে দৈনিক স্টেটসম্যানের সাব-এডিটর পদে যোগদানের মধ্য দিয়ে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর কর্মজীবন শুরু। ১৯৫১ সালে যুক্ত হন কূটনৈতিক পেশায়।
তাঁর প্রথম উপন্যাস 'লালসালু’ ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করেন মেরি। পরে উপন্যাসটি ১৯৬৭ সালে 'ট্রি উইথআউট রুটস' নামে ইংরেজিতেও অনূদিত হয়। এ ছাড়া তিনি ছোটোগল্প এবং নাটক রচনা করেছেন। তার দুটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের নাম ‘নয়নচারা’ এবং ‘দুই তীর ও অন্যান্য গল্প'। তার লেখা নাটক তিনটি হচ্ছে ‘বহিপীর', ‘তরঙ্গভঙ্গ’ ও ‘সুড়ঙ্গ'। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ ১৯৮৪ সালে সালে মরণোত্তর একুশে পদক পেয়েছেন। তিনি ১৯৬৫ সালে আদমজী পুরস্কার, ১৯৬১ বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৫৫ সালে পি.ই.এন পুরস্কার এবং শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০০১ পান।