ব্যাকচ্যানেল কূটনীতি কাকে বলে?
বর্তমান বিশ্বরাজনীতিতে বহুল আলোচিত একটি কূটনৈতিক প্রক্রিয়া হলো Backchannel Diplomacy। একে Track II Diplomacy বা দ্বৈত ট্র্যাক কূটনীতিও বলা হয় । ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা জোসেফ ভি মন্টভিল সংঘাত প্রশমনে Track II Diplomacy শব্দগুচ্ছ তৈরি করেন। ব্যাকচ্যানেল কূটনীতি হলো দুটো দেশ বা পক্ষের মধ্যে গোপনে পরিচালিত অনানুষ্ঠানিক আলোচনা। দুটি আলাদা দেশ বা একই দেশের দুটি বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি, যাদের একে অপরের সাথে কূটনৈতিক বা অফিসিয়ালি সম্পর্ক নেই, কিন্তু কোনো প্রয়োজনে তারা যে মাধ্যম বা মধ্যস্থতাকারী ব্যবহার করে আলোচনার টেবিলে একত্রিত হয়, এই মাধ্যম, মধ্যস্থতাকারী, সেই স্থান সব কিছু মিলিয়ে বলা হয়, ব্যাকচ্যানেল কূটনীতি। যেমন— সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যকার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় সিঙ্গাপুরে। যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তা সত্ত্বেও তারা আলোচনার টেবিলে বসে। সেক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াকে ব্যাকচ্যানেল কূটনীতি বলা হয়। এ কূটনীতির মূল উদ্দেশ্য হলো দুটি বিবদমান পক্ষের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ স্থাপন করে নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিয়ে সম্ভাব্য সংঘাত প্রশমন বা হ্রাস করা। বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানি, মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেশন বা সংস্থার মাধ্যমে দুটি দেশের মধ্যে ব্যাকচ্যানেল কূটনীতি পরিচালিত হয়ে থাকে। ব্যাকচ্যানেল কূটনীতির সুবিধা হলো, এই প্রক্রিয়ায় কোনো পূর্বশর্ত, রাজনৈতিক বা সাংবিধানিক প্রতিবন্ধকতা থাকে না বা কোনো কিছু হারানোর ভয় থাকে না তাই উভয় পক্ষ খোলামেলা ন আলোচনা করতে পারে। তবে এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে। ব্যাকচ্যানেল কূটনীতিতে এক পক্ষ অপর পক্ষকে সহজে প্রভাবিত করতে পারে না। এতে ফলাফল আসতে অনেক সময় লাগতে পারে ।