ণ-ত্ব- বিধান বাংলা বানানে কোন শব্দের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য
Solution
Correct Answer: Option A
- ণ-ত্ব বিধান হলো বাংলা ব্যাকরণের একটি নিয়ম, যা নির্ধারণ করে তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে কখন দন্ত্য-ন (ন) এর পরিবর্তে মূর্ধন্য-ণ (ণ) ব্যবহৃত হবে। এই নিয়মটি কেবল সেইসব শব্দের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, যেগুলো সংস্কৃত ভাষা থেকে কোনো পরিবর্তন ছাড়াই সরাসরি বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে, অর্থাৎ তৎসম শব্দের ক্ষেত্রে।
মূল বিষয়গুলো হলো:
- উৎপত্তি: ণ-ত্ব বিধানের নিয়মগুলো মূলত সংস্কৃত ব্যাকরণ থেকে নেওয়া হয়েছে। যেহেতু তৎসম শব্দগুলো সংস্কৃত থেকে অবিকৃতভাবে বাংলায় এসেছে, তাই এই শব্দগুলোর বানান সংস্কৃত নিয়ম অনুসারেই লেখা হয়।
- প্রযোজ্যতার ক্ষেত্র: এই নিয়ম শুধুমাত্র তৎসম শব্দের বানানেই সীমাবদ্ধ। খাঁটি বাংলা শব্দ, তদ্ভব (সংস্কৃত থেকে পরিবর্তিত হয়ে আসা শব্দ), দেশি এবং বিদেশি শব্দের ক্ষেত্রে ণ-ত্ব বিধান প্রযোজ্য হয় না। এই শব্দগুলোতে মূর্ধন্য-ণ (ণ) এর পরিবর্তে সবসময় দন্ত্য-ন (ন) ব্যবহৃত হয়।
- উদাহরণ (যেখানে প্রযোজ্য নয়): কোরআন, জার্মান, ধরন, করেন, রান (বিদেশি ও তদ্ভব শব্দ)।
ণ-ত্ব বিধানের কিছু সাধারণ নিয়ম:
- 'ঋ', 'র', 'ষ' বর্ণের পরে মূর্ধন্য-ণ (ণ) হয়। যেমন: ঋণ, বর্ণ, কারণ, ভাষণ।
- ট-বর্গীয় ধ্বনির (ট, ঠ, ড, ঢ) আগে যুক্ত হলে মূর্ধন্য-ণ (ণ) হয়। যেমন: ঘণ্টা, লুণ্ঠন, কাণ্ড।
- কিছু শব্দে কোনো নিয়ম ছাড়াই স্বভাবতই 'ণ' হয়। যেমন: চাণক্য, মাণিক্য, লবণ, পুণ্য।
সুতরাং, এটি ণ-ত্ব বিধান কেবল তৎসম শব্দের বানান শুদ্ধ রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়।