'রাত্রির মধ্য = মধ্যরাত' কোন সমাসের উদাহরণ?
Solution
Correct Answer: Option C
“মধ্যরাত” = “মধ্য + রাত” সমাসটি সুপসুপা সমাস এর উদাহরণ। কারণ নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো এ সমাসে প্রযোজ্য:
উভয় পদই অব্যয়, এখানে “মধ্য” এবং “রাত”—দুটি উৎসর্গী শব্দই অব্যয়ী পদ (ক্রিয়া বা বিশেষণ নয়)।
পদদ্বয়ের অক্ষর বিনিময় (লঘু–সন্ন্যাস)
“রাত্রির মধ্য” বলতে “রাত্রি” + “ই” প্রীত্যয়যুক্ত “রাত্রি-র মধ্য” ধরা যায়; তবে সমাসে “রাত্রি” অক্ষরহীন রূপ “রাত” হয়ে যায়, অর্থাৎ যোগসূত্রে বিনিময়ে গুরুত্ব পায় না। উপরন্তু, “রাত্রি” শব্দের “রি” অংশ গিয়ে “রাত” রূপ নেয়—বাংলা কথ্যায় “রাত্রি”–কে ছোট করে “রাত” বলা হয়; এ রূপান্তরেই সুপসুপা সমাসের প্রক্রিয়া লক্ষণীয়।
“মধ্যরাত” রচনা পদ্ধতিতে “মধ্য” + “রাত” যোগ করে মিলিয়ে “মধ্যরাত” শব্দটি গঠিত হয়। এখানে ভিন্ন কোনো নির্দিষ্ট যোগসূত্রসূচক ছাড়া পদের সম্মিলন ঘটেছে।
মধ্যরাতের মূল ভাব “রাত্রির মধ্যভাগ”
অর্থত “রাত্রির মধ্যভাগ” → “মধ্যরাত”; মূলত “রাত্রি” + “মধ্য” এর আদলে গিয়ে উভয় অব্যয়পদ সরাসরি একত্রিত হয়ে “মধ্যরাত” রূপ নেয়।
অন্যান্য সমাসপদগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে বুঝা যায় কেন এটিকে সুপসুপা বলা হয়:
নিত্য সমাস: সাধারণত “নিত্য” (অবিচ্ছেদ্য) মানে ক্রিয়া বা বিশেষণ + অব্যয় মিলিয়ে; যেমন “জলখাবার” (“জল” + “খাবার”)—এখানে “জল” (নিপাত) + “খাবার” (নিপাত) মিলিয়ে “জলখাবার” হচ্ছে, কিন্তু শব্দগঠন ধরন আলাদা হতে পারে।
প্রাদি সমাস: প্রথম পদস্বরূপ অব্যয়, দ্বিতীয় পদস্বরূপ বিশেষ্য; তবে “মধ্য” ও “রাত” দুটোই বিশেষ্য/নিপাত, তাই এখানে প্রাদি প্রযোজ্য নয়।
অব্যয়ীভাব সমাস: যেখানে অব্যয় (নিপাত)—রকম শব্দ সম্মিলিত হয়ে বিশিষ্ট্যরূপ ধারণ করে; যেমন “বাস্তুতত্ত্ব” (“বাস্তু” (নিপাত) + “তত্ত্ব” (বিশিষ্ট্য)) ইত্যাদি। “মধ্য” ও “রাত” একত্রিত হলেও এখানে অভ্যায়ী ভাব (কার্যের নির্দেশিকা) মূল না; বরং সরাসরি মিলন।