ধ্বনি পরিবর্তন (189 টি প্রশ্ন )

'করিয়া' থেকে 'করে' শব্দটির পরিবর্তন একটি ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া যা অভিশ্রুতি (Umlaut) নামে পরিচিত।
এই পরিবর্তনটি দুটি ধাপে ঘটে:

১. অপিনিহিতি: প্রথমে 'করিয়া' শব্দটি কথ্য ভাষায় 'কইরা' বা 'কইর‍্যা' রূপ নেয়। এখানে 'ই' কারটি তার স্বাভাবিক অবস্থানের আগে চলে আসে। একে অপিনিহিতি বলে।
২. অভিশ্রুতি: এরপর, অপিনিহিতির ফলে সৃষ্ট 'ই' ধ্বনি এবং তার পূর্ববর্তী 'অ' ধ্বনি মিলিত হয়ে 'এ' ধ্বনিতে রূপান্তরিত হয় ('অ' + 'ই' = 'এ') এবং পরবর্তী 'আ' ধ্বনি লুপ্ত হয়। ফলে 'কইরা' থেকে 'করে' শব্দটি তৈরি হয়।

এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি হলো অভিশ্রুতি, যা মূলত অপিনিহিতির পরবর্তী ধাপ।


- অভিশ্রুতি হলো অপিনিহিতির পরবর্তী পর্যায়।
- অপিনিহিতির ফলে কোনো স্বরধ্বনি (সাধারণত ই বা উ) তার স্বাভাবিক অবস্থানের আগে চলে আসে। পরবর্তীতে সেই এগিয়ে আসা স্বরধ্বনিটি তার পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সাথে মিশে যায় এবং পরবর্তী স্বরকেও পরিবর্তন করে, এই প্রক্রিয়াকেই অভিশ্রুতি বলে।
- উদাহরণস্বরূপ: 'করিয়া' শব্দটি অপিনিহিতির ফলে 'কইরা' হয় এবং অভিশ্রুতির মাধ্যমে তা 'করে'-তে পরিণত হয়।
- উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা অন্য কোনো কারণে শব্দের শুরুতে বা আদিতে যখন কোনো স্বরধ্বনি যুক্ত হয়, তখন সেই প্রক্রিয়াটিকে আদি স্বরাগম বলা হয়।
- সাধারণত শব্দের প্রথমে যুক্তব্যঞ্জন থাকলে তা উচ্চারণ করতে সহজ করার জন্য তার আগে স্বরধ্বনি আনা হয়।
- যেমন: স্কুল > ইস্কুল, স্টেশন > ইস্টিশন, স্পর্ধা > আস্পর্ধা ইত্যাদি।
- বাংলা ব্যাকরণে, প্রকৃতির শেষে প্রত্যয় যুক্ত হলে প্রকৃতির আদিস্বরের যে পরিবর্তন ঘটে, তাকে গুণ ও বৃদ্ধি বলে
- কৃৎ প্রত্যয় যুক্ত হওয়ার সময় প্রকৃতির বা ধাতুর আদিস্বরের এই পরিবর্তন নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে হয়ে থাকে।

গুণ ও বৃদ্ধি কী?
গুণ: ই, ঈ-কারের স্থলে এ-কার এবং উ, ঊ-কারের স্থলে ও-কার হলে তাকে গুণ বলে।
উদাহরণ:
- √চিন্ + আ = চেনা (এখানে 'ই'-কার পরিবর্তিত হয়ে 'এ'-কার হয়েছে)
- √নী + আ = নেওয়া (এখানে 'ঈ'-কার পরিবর্তিত হয়ে 'এ'-কার হয়েছে)
= √ধু + আ = ধোয়া (এখানে 'উ'-কার পরিবর্তিত হয়ে 'ও'-কার হয়েছে)

বৃদ্ধি: অ-কারের স্থলে আ-কার, ই-কার ও ঈ-কারের স্থলে ঐ-কার এবং উ, ঊ-কারের স্থলে ঔ-কার হলে তাকে বৃদ্ধি বলে।
উদাহরণ:
- √পচ্ + অক = পাচক (এখানে 'অ'-কার পরিবর্তিত হয়ে 'আ'-কার হয়েছে)
- √শিশু + অ = শৈশব (এখানে 'ই'-কার পরিবর্তিত হয়ে 'ঐ'-কার হয়েছে)
- √যুবন্ + অ = যৌবন (এখানে 'উ'-কার পরিবর্তিত হয়ে 'ঔ'-কার হয়েছে)

সুতরাং, সঠিক উত্তর হলো গুণ।
অপিনিহিতি হলো একটি ধ্বনিগত পরিবর্তন যেখানে শব্দের মধ্যে থাকা 'ই' বা 'উ' ধ্বনি তার প্রকৃত স্থান থেকে এগিয়ে এসে উচ্চারিত হয়। অর্থাৎ, 'ই' বা 'উ' ধ্বনিটি তার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের পরে না বসে, সেই ব্যঞ্জনের আগেই বসে যায়।
উদাহরণস্বরূপ:
আজি > আইজ: এখানে 'আজি' শব্দে 'জ' এর পরে 'ই' ছিল। অপিনিহিতির কারণে 'ই' ধ্বনিটি 'জ' এর আগে চলে এসে 'আইজ' হয়েছে।
সাধু > সাউধ: এখানে 'সাধু' শব্দে 'ধ' এর পরে 'উ' ছিল। অপিনিহিতির কারণে 'উ' ধ্বনিটি 'ধ' এর আগে চলে এসে 'সাউধ' হয়েছে।
সত্য > সত্যি > সইত্য: এখানে 'সত্য' থেকে 'সত্যি' হয়ে তারপর অপিনিহিতির কারণে 'ই' ধ্বনিটি 'ত্' এর আগে চলে এসে 'সইত্য' হয়েছে।
দুটি স্বরধ্বনি পাশাপাশি উচ্চারিত হলে মাঝখানে একটি শূন্যস্থানের সৃষ্টি হয়, যা উচ্চারণকে কিছুটা কঠিন করে তোলে। এই কঠিনতা দূর করার জন্য স্বাভাবিকভাবেই মাঝখানে একটি অতিরিক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির আগমন ঘটে। এই অতিরিক্ত ধ্বনিকে শ্রুতিধ্বনি বলা হয়। বাংলা ভাষায় এই শ্রুতিধ্বনি দুই প্রকারের হয়ে থাকে:

য়-শ্রুতি (অ-শ্রুতি): দুটি স্বরধ্বনির মধ্যে যদি ‘য়’ (y) ধ্বনির আগমন ঘটে, তবে তাকে য়-শ্রুতি বা অ-শ্রুতি বলে।
উদাহরণ: মা + এর = মায়ের। এখানে ‘আ’ এবং ‘এ’ স্বরধ্বনি দুটির মাঝে ‘য়’ শ্রুতিধ্বনির আগমন ঘটেছে।

ব-শ্রুতি: দুটি স্বরধ্বনির মধ্যে যখন ‘ব’ (w) ধ্বনির আগমন ঘটে, তখন তাকে ব-শ্রুতি বলা হয়।
উদাহরণ: খা + আ = খাওয়া। এখানে ‘আ’ এবং ‘আ’ স্বরধ্বনি দুটির মাঝে ‘ব’ (ওয়া) শ্রুতিধ্বনির আগমন ঘটেছে।
• মধ্য স্বরাগম, বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি (Anaptyxis):
- সময় সময় উচ্চারণের সুবিধার জন্য সংযুক্ত ব্যঞ্জন-ধ্বনির মাঝখানে স্বরধ্বনি আসে।
- একে বলা হয় মধ্য স্বরাগম বা বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি।
যেমন-
- অ- রত্ন> রতন, ধর্ম> ধরম, স্বপ্ন> স্বপন, হর্ষ> হরষ ইত্যাদি।
- আ- প্রাণ>পরাণ ইত্যাদি।
- ই- প্রীতি > পিরীতি, ক্লিপ >কিলিপ, ফিল্ম> ফিলিম ইত্যাদি।
- ও- শ্লোক > শোলোক, মুরগ >মুরোগ> মোরগ ইত্যাদি।
- এ- গ্রাম > গেরাম, প্রেক> পেরেক, স্রেফ> সেরেফ ইত্যাদি।
দ্বিত্ব ব্যঞ্জন বা ব্যঞ্জনদ্বিত্বতা : শব্দের কোন ব্যঞ্জন দ্বিত্ব হলে, অর্থাৎ দুইবার উচ্চারিত হলে তাকে দ্বিত্ব ব্যঞ্জন বা ব্যঞ্জনদ্বিত্বতা বলে । মূলত জোর দেয়ার জন্য দ্বিত্ব ব্যঞ্জন হয় । যেমন, পাকা> পাক্কা, সকাল> সক্কাল
- ব্যঞ্জনসন্ধিতে একটি ধ্বনির প্রভাবে পার্শ্ববর্তী ধ্বনি পরিবর্তিত হয়ে যায়।

যেমন:
- চলৎ + চিত্র = চলচ্চিত্র (এখানে চ-এর প্রভাবে ত হয়েছে চ)।
- বিপদ্ + জনক = বিপজ্জনক (এখানে জ-এর প্রভাবে দ হয়েছে জ)।
- উৎ + লাস = উল্লাস (এখানে ল-এর প্রভাবে ত হয়েছে ল)।
- বাক্ + দান = বাগ্দান (এখানে ঘোষধ্বনি দ-এর প্রভাবে ক হয়েছে গ)।
- তৎ + মধ্যে = তন্মধ্যে (এখানে নাসিক্য ধ্বনি ম-এর প্রভাবে ত হয়েছে ন )।
- শম্ + কা = শঙ্কা (এখানে কণ্ঠ্যধ্বনি ক-এর প্রভাবে ম হয়েছে ঙ)।
- সম্ + চয় = সঞ্চয় (এখানে তালব্যধ্বনি চ-এর প্রভাবে ম হয়েছে ঞ)।

উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি, নবম-দশম শ্রেণি (২০২১ সংস্করণ)।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
কোনো কোনো সময় শব্দের শেষে অতিরিক্ত স্বরধ্বনি আসে। এরুপ স্বরাগমকে বলে অন্ত্যস্বরাগম।
যেমন -
- দিশ্ > দিশা;
- পোখত্ > পোক্ত;
- বেঞ্চ > বেঞ্চি;
- সত্য > সত্যি ইত্যাদি।
প্রগত সমীভবন:
- পূর্ব ধ্বনির প্রভাবে পরবর্তী ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে।
- অর্থাৎ পরবর্তী ধ্বনি পূর্ববর্তী ধ্বনির মতাে হয়, একে বলে প্রগত সমীভবন।
- যেমন: চক্র > চক্ক, পক্ব > পক্ক, পদ্ম > পদ্দ, লগ্ন > লগ্গ, লাল > নাল ইত্যাদি।
ব্যঞ্জনচ্যুতি : পাশাপাশি দুটি একই উচ্চারণের ব্যঞ্জন থাকলে তার একটি লোপ পেলে তাকে বলে ব্যঞ্জনচ্যুতি । যেমন, বউদিদি> বউদি, বড় দাদা> বড়দা
দ্রুত উচ্চারণের জন্য শব্দের আদি ,অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোন স্বরধ্বনির লোপকে বলা হয় সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ ।
যেমনঃ
- গামোছা >গামছা ;
- সুবর্ণ>স্বর্ণ;
- অগুরু>অগ্রু


স্বরলোপ বা সম্প্রকর্ষ ৩ প্রকার:
- আদিস্বরলোপ
- মধ্যস্বর লোপ
- অন্ত্যস্বর লোপ
ধ্বনি প্রধানত দুই প্রকার- ১) স্বরধ্বনি এবং ২) ব্যঞ্জনধ্বনি। উভয়প্রকার ধ্বনিরই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। আবার ধ্বনি পরিবর্তনের ধরণগুলি মূলত চার প্রকারের। যথা- 
ক) ধ্বনির আগম- উচ্চারণকালে নতুন একটি বা একাধিক ধ্বনির আগমন ঘটে। যেমন- স্কুল> ইস্কুল, স্ত্রী> ইস্ত্রী ইত্যাদি।
খ) ধ্বনির লোপ- উচ্চারণকালে একটি বা একাধিক ধ্বনি লোপ পায়। যেমন- গামোছা> গামছা, জানালা> জানলা ইত্যাদি।
গ) ধ্বনির রূপান্তর- শব্দমধ্যস্থ কোনো ধ্বনি রূপান্তরিত হয়। যেমন- গল্প> গপ্প, শরীর> শরীল ইতাদি।
ঘ) ধ্বনির স্থানান্তর- দ্রুত উচ্চারণের ফলে বা অসাবধানতাবশত পাশাপাশি থাকা দুটি ধ্বনি একটির জায়গায় আরেকটি উচ্চারিত হয়। যেমন- রিকশা> রিশকা, মুকুট> মুটুক ইত্যাদি। 
 
নবম ও দশম শ্রেণির নতুন বাংলা ভাষার ব্যাকরণ গ্রন্থে প্রায় ১৮ প্রকার ধ্বনি পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে।
ব্যঞ্জনচ্যুতি : পাশাপাশি দুটি একই উচ্চারণের ব্যঞ্জন থাকলে তার একটি লোপ পেলে তাকে বলে ব্যঞ্জনচ্যুতি । যেমন, বউদিদি> বউদি, বড় দাদা> বড়দা
আদি স্বরাগম : শব্দের আদিতে বা শুরচতে স্বরধ্বনি এলে তাকে বলা হয় আদি স্বরাগম । যেমন, ‘স্কুল’ শব্দটি উচ্চারণের সুবিধার জন্য শুরুতে ‘ই’ স্বরধ্বনি যুক্ত হয়ে ‘ইস্কুল’ হয়ে গেছে । এটি আদি স্বরাগম । এরকম- স্টেশন> ইস্টিশন, স্ট্যাবল> আস্তাবল, স্পর্ধা > আস্পর্ধা
অন্ত্যস্বরাগম: শব্দের শেষে একটা অতিরিক্ত স্বরধ্বনি আসলে তাকে বলে অন্ত্যস্বরাগম। যেমন, দিশ্-র সঙ্গে অতিরিক্ত ‘আ’ স্বরধ্বনি যুক্ত হয়ে হয়েছে ‘দিশা’। এরকম- পো> পোক্ত, বেঞ্চ> বেঞ্চি, সত্য> সত্যি

শব্দের মধ্যে দুটি ব্যঞ্জনের পরস্পর পরিবর্তন ঘটলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে।
যেমনঃ
- ইংরেজি বাক্‌স > বাংলা বাস্‌ক,
- পিশাচ > পিচাশ,
- রিকসা্‌ > রিস্‌কা, 
- জাপানি রিক্‌সা > বাংলা রিস্‌কা,
- লাফ > ফাল।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
ধ্বনির পরিবর্তনের নিয়ম বা প্রক্রিয়াগুলো নিচে দেয়া হলো-
১. আদি স্বরাগম : শব্দের আদিতে বা শুরচতে স্বরধ্বনি এলে তাকে বলা হয় আদি স্বরাগম । যেমন, ‘স্কুল’ শব্দটি উচ্চারণের সুবিধার জন্য শুরচতে ‘ই’ স্বরধ্বনি যুক্ত হয়ে ‘ইস্কুল’ হয়ে গেছে । এটি আদি স্বরাগম । এরকম- স্টেশন> ইস্টিশন, স্ট্যাবল> আস্তাবল, স্পর্ধা> আস্পর্ধা

২. মধ্য দ্বরাগম, বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি : শব্দের মাঝখানে স্বরধ্বনি আসলে তাকে বলে মধ্য স্বরাগম। যেমন, 'রত্ন' (র+অ+ত+ন+অ) শব্দের ‘ত’ ও ‘ন’-র মাঝখানে একটি অ যুক্ত হয়ে হয়েছে ‘রতন’ । এটি মধ্য স্বরাগম । এরকম- ধর্ম> ধরম, স্বপ্ন> স্বপন, হর্ষ> হরষ, প্রীতি> পিরীতি, ক্লিপ> কিলিপ, ফিল্ম> ফিলিম, মুক্তা> মুকুতা, তুর্ক> তুরুক, ভু> ভুরু, গ্রাম> গেরাম, প্রেক> পেরেক, স্রেফ> সেরেফ, শ্লোক> শোলোক, মুরগ> মুরোগ> মোরোগ.

৩. অভ্যস্বরাগম : শব্দের শেষে একটা অতিরিক্ত স্বরধ্বনি আসলে তাকে বলে অন্ত্যস্বরাগম। যেমন, দিশ্-র সঙ্গে অতিরিক্ত ‘আ’ স্বরধ্বনি যুক্ত হয়ে হয়েছে ‘দিশা’। এরকম- পো> পোক্ত, বেঞ্চ> বেঞ্চি, সত্য> সত্যি

৪. অপিনিহিতি : পরের ‘ই’ বা ‘উ’ স্বরধ্বনি আগে উচ্চারিত হলে কিংবা যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির আগে ‘ই’ বা ‘উ’ স্বরধ্বনি উচ্চারিত হলে তাকে অপিনিহিতি বলে । যেমন, "আজি (আ+জ+ই) শব্দের ‘ই’ আগে উচ্চারিত হয়ে হয়েছে 'আইজ'। (আ+ই+জ) । এরকম- সাধু>সাউধ, রাখিয়া> রাইখ্যা, বাক্য>বাইক্য, সত্য> সইত্য, চারি> চাইর, মারি> মাইর

৫. অসমীকরণ : দুটো একই ধ্বনির পুনরাবৃত্তি দূর করার জন্য মাঝখানে একটি অতিরিক্ত স্বরধ্বনি যুক্ত হলে তাকে বলে। অসমীকরণ । যেমন, ধপ+ধপ> (মাঝখানে একটি অতিরিক্ত আ যোগ হয়ে) ধপাধপ । এরকম- টপ+টপ> টপাটপ

৬. স্বরসঙ্গতি : দুটি স্বরধ্বনির মধ্যে সঙ্গতি রক্ষার্থে একটির প্রভাবে আরেকটি পরিবর্তিত হলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে। যেমন, ‘দেশি’ (দ+এ+শ+ই)> (‘ই’-র প্রভাবে ‘এ’ পরিবর্তিত হয়ে ‘ই’ হয়ে) ‘দিশি’ ।
স্বরসঙ্গতি ৫ প্রকার-
ক. প্রগত : আগের স্বরধ্বনি অনুযায়ী পরের স্বরধ্বনি পরিবর্তিত হলে, তাকে প্রগত স্বরসঙ্গতি বলে । যেমন, মুলা মুলো, শিকা> শিকে, তুলা> তুলো
খ.পরাগত : পরের স্বরধ্বনি অনুযায়ী আগের স্বরধ্বনি পরিবর্তিত হলে, তাকে পরাগত স্বরসঙ্গতি বলে । যেমন, আখো> আখুয়া> এখো, দেশি> দিশি
গ. মধ্যগত : অন্যান্য স্বরধ্বনির প্রভাবে মধ্যবর্তী স্বরধ্বনি পরিবর্তিত হলে, তাকে মধ্যগত স্বরসঙ্গতি বলে । যেমন বিলাতি> বিলিতি
ঘ. অন্যোন্য : আগের ও পরের স্বরধ্বনি দুইয়ের প্রভাবে যদি দুইটি-ই পরিবর্তিত হয়ে যায়, তাকে অন্যোন্য স্বরসঙ্গতি বলে । যেমন, মোজা> মুজো
ঙ. চলিত বাংলায় স্বরসঙ্গতি : গিলা> গেলা, মিলামিশা> মেলামেশা । মিঠা> মিঠে, ইচ্ছা> ইচ্ছে । মুড়া>মুড়ো, চুলা> চুলো । উড়ুনি> উড়নি, এখুনি> এখনি ।

৭। সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : শব্দের মধ্যবর্তী কোন স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ বলে । যেমন, ‘বসতি' (ব+অ+স+অ+ত+ই)-র মাঝের ‘অ’ স্বরধ্বনি লোপ পেয়ে হয়েছে ‘বস্তি’ (ব+অ+স+ত+ই) ।
স্বরলোপ ৩ প্রকার-
ক. আদিস্বরলোপ : শব্দের শুরুর স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে আদি স্বরাগম বলে । যেমন, অলাবু> লাবু> লাউ, এড়ন্ড> (‘এ’ লোপ পেয়ে) রেড়ী, উদ্ধার> উধার> ধার ।
খ. মধ্যস্বরলোপ : শব্দের মধ্যবর্তী কোন স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে মধ্যস্বরাগম বলে । যেমন, অগুরু> অগ্নু, সুবর্ণ> স্বর্ণ
গ. অন্ত্যস্বরালোপ : শব্দের শেষের স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে অন্ত্যস্বরাগম বলে । যেমন, আশা> আশ, আজি> আজ, চারি> চার, সন্ধ্যা> সঞ্ঝ্যা> সাঁঝ (স্বরলোপ স্বরাগম-এর বিপরীত প্রক্রিয়া ।)

৮। ধ্বনি বিপর্যয় : শব্দের মধ্যবর্তী দুটো ব্যঞ্জনধ্বনি অদলবদল হলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে । যেমন, বাক্স> বাস্ক, রিক্সা> রিস্কা, পিশাচ> পিচাশ, লাফ> ফাল

৯। সমীভবন : (স্বরসঙ্গতির মতো, কিন্তু ব্যঞ্জন ধ্বনির পরিবর্তন হয়) দুটি ব্যঞ্জনধ্বনির একে অপরের প্রভাবে পরিবর্তিত হয়ে সমতা লাভ করলে তাকে সমীভবন বলে । যেমন, ‘জন্ম’ (জ+অ+ন+ম+অ)-এর ‘ন’, ‘ম’-র প্রভাবে পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে ‘জম্ম’।

সমীভবন মূলত ৩ প্রকার-
ক. প্রগত সমীভবন : আগের ব্যঞ্জনধ্বনির প্রভাবে পরবর্তী ব্যঞ্জনধ্বনির পরিবর্তন । যেমন, চক্র চক্ক, পক্ক> পৰ্ব্ব, পদ্ম> পদ্দ, লগ্ন> লগ
খ. পরাগত সমীভবন : পরের ব্যঞ্জনধ্বনির প্রভাবে আগের ব্যঞ্জনধ্বনির পরিবর্তন । যেমন, তৎ+জন্য> তজ্জন, তৎ+হিত> তদ্ধিত, উৎ+মুখ> উন্মুখ
গ. অন্যোন্য সমীভবন : পাশাপাশি দুটো ব্যঞ্জনধ্বনি দুইয়ের প্রভাবে দু'টিই পরিবর্তিত হলে তাকে অন্যোন্য সমীভবন বলে । যেমন, সত্য (সংস্কৃত)> সচ্চ (প্রাকৃত), বিদ্যা (সংস্কৃত)> বিজ্জা (প্রাকৃত)

১০। বিষমীভবন : পাশাপাশি একই ব্যঞ্জনধ্বনি দু’বার থাকলে তাদের একটি পরিবর্তিত হলে তাকে বিষমীভবন বলে । যেমন, শরীর> শরীল, লাল> নাল

১১। দ্বিত্ব ব্যঞ্জন বা ব্যঞ্জনদ্বিত্বতা : শব্দের কোন ব্যঞ্জন দ্বিত্ব হলে, অর্থাৎ দুইবার উচ্চারিত হলে তাকে দ্বিত্ব ব্যঞ্জন বা ব্যঞ্জনদ্বিত্বতা বলে । মূলত জোর দেয়ার জন্য দ্বিত্ব ব্যঞ্জন হয় । যেমন, পাকা> পাক্কা, সকাল> সক্কাল

১২। ব্যঞ্জন বিকৃতি : কোন ব্যঞ্জনধ্বনি পরিবর্তিত হয়ে অন্য কোন ব্যঞ্জনধ্বনি হলে তাকে ব্যঞ্জন বিকৃতি বলে । যেমন, কবাট> কপাট, ধোবা> ধোপা, ধাইমা> দাইমা

১৩। ব্যঞ্জনচ্যুতি : পাশাপাশি দুটি একই উচ্চারণের ব্যঞ্জন থাকলে তার একটি লোপ পেলে তাকে বলে ব্যঞ্জনচ্যুতি । যেমন, বউদিদি> বউদি, বড় দাদা> বড়দা,

১৪। অন্তহর্তি : কোন ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে তাকে বলে অন্তর্হতি । যেমন, ফাল্গুন> ফাগুন (‘ল’ লোপ), ফলাহার> ফলার, আলাহিদা> আলাদা

১৫। অভিশ্রুতি : যদি অন্য কোন প্রক্রিয়ায় কোন স্বরধ্বনি পরিবর্তিত হয়, এবং পরিবর্তিত স্বরধ্বনি তার আগের স্বরধ্বনির সঙ্গে মিলে যায়, এবং সেই মিলিত স্বরধ্বনির প্রভাবে তার পরের স্বরধ্বনিও পরিবর্তিত হয়, তবে তাকে অভিশ্রুতি বলে । যেমন, ‘করিয়া’ (ক+অ+র+ই+য়+আ) থেকে অপিনিহিতির মাধ্যমে (র+ই-এর আগে আরেকটা অতিরিক্ত ‘ই’ যোগ হয়ে) ‘কইরিয়া’ হলো । অর্থাৎ অন্য কোন প্রক্রিয়ায় ‘ই’ স্বরধ্বনিটির পরিবর্তন হলো। আবার ‘কইরিয়া’- এর র+ই-এর ‘ই’ তার আগের ‘ই’-র সঙ্গে মিলে গেলে হলো ‘কইরয়া’ বা ‘কইরা’ । এবার ‘কইরা’-র ‘ই’ ও ‘আ’ পরিবর্তিত হয়ে হলো ‘করে’ । এটিই অভিশ্রুতি । এরকম, শুনিয়া> শুইনিয়া> শুইনা> শুনে, বলিয়া> বইলিয়া> বইলা> বলে, হাটুয়া> হাউটুয়া> হাউটা> হেটো, মাছুয়া> মাউছুয়া> মাউছা> মেছো
.
১৬। র-কার লোপ : (আধুনিক চলিত বাংলায় প্রচলিত) শব্দের ‘র’ ধ্বনি বা ‘র-কার’ লোপ পেয়ে পরবর্তী ব্যঞ্জন দ্বিত্ব হলে তাকে র-কার লোপ বলে । যেমন, তর্ক> তক্ক, করতে> কত্তে, মারল> মালল, করলাম> কল্লাম

১৭। হ-কার লোপ : (আধুনিক চলিত বাংলায় প্রচলিত) অনেক সময় দুইটি স্বরধ্বনির মধ্যবর্তী ‘হ’ ধ্বনি বা ‘হ-কার’ লোপ পায় । একে হ-কার লোপ বলে । যেমন, ‘গাহিল’ (গ+আ+হ+ই+ল+অ)-এর ‘আ’ ও ‘ই’ স্বরধ্বনি দুটির মধ্যবর্তী ‘হ’ লোপ পেয়ে হয়েছে ‘গাইল’ । এরকম, পুরোহিত> পুরুত, চাহে> চায়, সাধু> সাহু> সাউ, আল্লাহ> আল্লা, শাহ> শা

১৮। অ-শ্রুতি ও ব-শ্রুতি : পাশাপাশি দুটো স্বরধ্বনি উচ্চারিত হলে, এবং সেই দুটি স্বরধ্বনি মিলে কোন যৌগিক স্বর তৈরি না করলে উচ্চারণের সুবিধার জন্য মাঝে একটি অন্তঃস্থ ‘য়’ বা অন্তঃস্ত ‘ব’ উচ্চারিত হয় । একে অ-শ্রুতি ও ব-শ্রুতি বলে । যেমন, ‘যা+আ’, এখানে পরপর দুটি ‘আ’ স্বরধ্বনি আছে । দুটি যুক্ত হয়ে কোন যৌগিক স্বর তৈরি করছে না । তাই এখানে মাঝখানে একটি অন্তঃস্থ ‘য়’ উচ্চারিত হয়ে হবে ‘যাওয়া’ । এরকম, নাওয়া, খাওয়া, দেওয়া।
ক্ষীণায়নঃ শব্দ মধ্যস্থিত মহাপ্রাণ ধ্বনি অল্পপ্রাণ ধ্বনিতে পরিণত হলে বা অল্পপ্রাণ ধ্বনির মতো উচ্চারিত হলে তাকে ক্ষীণায়ন বলে।
যেমন: পাঁঠা˃পাঁটা, কাঠ˃কাট ইত্যাদি।
- স্বরসঙ্গতি : দুটি স্বরধ্বনির মধ্যে সঙ্গতি রক্ষার্থে একটির প্রভাবে আরেকটি পরিবর্তিত হলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে। যেমন, ‘দেশি’ (দ+এ+শ+ই)> (‘ই’-র প্রভাবে ‘এ’ পরিবর্তিত হয়ে ‘ই’ হয়ে) ‘দিশি’।

স্বরসঙ্গতি ৫ প্রকার-
ক. প্রগত : আগের স্বরধ্বনি অনুযায়ী পরের স্বরধ্বনি পরিবর্তিত হলে, তাকে প্রগত স্বরসঙ্গতি বলে । যেমন, মুলা মুলো, শিকা> শিকে, তুলা> তুলো
খ. পরাগত : পরের স্বরধ্বনি অনুযায়ী আগের স্বরধ্বনি পরিবর্তিত হলে, তাকে পরাগত স্বরসঙ্গতি বলে । যেমন, আখো> আখুয়া> এখো, দেশি> দিশি
গ. মধ্যগত : অন্যান্য স্বরধ্বনির প্রভাবে মধ্যবর্তী স্বরধ্বনি পরিবর্তিত হলে, তাকে মধ্যগত স্বরসঙ্গতি বলে । যেমন বিলাতি> বিলিতি
ঘ. অন্যোন্য : আগের ও পরের স্বরধ্বনি দুইয়ের প্রভাবে যদি দুইটি-ই পরিবর্তিত হয়ে যায়, তাকে অন্যোন্য স্বরসঙ্গতি বলে । যেমন, মোজা> মুজো
ঙ. চলিত বাংলায় স্বরসঙ্গতি : গিলা> গেলা, মিলামিশা> মেলামেশা । মিঠা> মিঠে, ইচ্ছা> ইচ্ছে । মুড়া>মুড়ো, চুলা> চুলো । উড়ুনি> উড়নি, এখুনি> এখনি ।
- সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : শব্দের মধ্যবর্তী কোন স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ বলে । যেমন, ‘বসতি' (ব+অ+স+অ+ত+ই)-র মাঝের ‘অ’ স্বরধ্বনি লোপ পেয়ে হয়েছে ‘বস্তি’ (ব+অ+স+ত+ই) ।

স্বরলোপ ৩ প্রকার-
ক. আদিস্বরলোপ : শব্দের শুরুর স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে আদি স্বরাগম বলে । যেমন, অলাবু> লাবু> লাউ, এড়ন্ড> (‘এ’ লোপ পেয়ে) রেড়ী, উদ্ধার> উধার> ধার ।
খ. মধ্যস্বরলোপ : শব্দের মধ্যবর্তী কোন স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে মধ্যস্বরাগম বলে । যেমন, অগুরু> অগ্নু, সুবর্ণ> স্বর্ণ
গ. অন্ত্যস্বরালোপ : শব্দের শেষের স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে অন্ত্যস্বরাগম বলে । যেমন, আশা> আশ, আজি> আজ, চারি> চার, সন্ধ্যা> সঞ্ঝ্যা> সাঁঝ (স্বরলোপ স্বরাগম-এর বিপরীত প্রক্রিয়া ।)
মধ্য দ্বরাগম, বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি:
- শব্দের মাঝখানে স্বরধ্বনি আসলে তাকে বলে মধ্য স্বরাগম বা বিপ্রকর্ষ।
- যেমন, 'রত্ন' (র+অ+ত+ন+অ) শব্দের ‘ত’ ও ‘ন’-র মাঝখানে একটি অ যুক্ত হয়ে হয়েছে ‘রতন’ । এটি মধ্য স্বরাগম । এরকম- ধর্ম> ধরম, স্বপ্ন> স্বপন, হর্ষ> হরষ, প্রীতি> পিরীতি, ক্লিপ> কিলিপ, ফিল্ম> ফিলিম, মুক্তা> মুকুতা, তুর্ক> তুরুক, ভু> ভুরু, গ্রাম> গেরাম, প্রেক> পেরেক, স্রেফ> সেরেফ, শ্লোক> শোলোক, মুরগ> মুরোগ> মোরোগ।

অন্যদিকে,
- স্বরসঙ্গতি : দুটি স্বরধ্বনির মধ্যে সঙ্গতি রক্ষার্থে একটির প্রভাবে আরেকটি পরিবর্তিত হলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে। যেমন, ‘দেশি’ (দ+এ+শ+ই)> (‘ই’-র প্রভাবে ‘এ’ পরিবর্তিত হয়ে ‘ই’ হয়ে) ‘দিশি’ 
ধ্বনি বিপর্যয় : শব্দের মধ্যবর্তী দুটো ব্যঞ্জনধ্বনি অদলবদল হলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে । যেমন, বাক্স> বাস্ক, রিক্সা> রিস্কা, পিশাচ> পিচাশ, লাফ> ফাল
সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : শব্দের মধ্যবর্তী কোন স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ বলে । যেমন, ‘বসতি' (ব+অ+স+অ+ত+ই)-র মাঝের ‘অ’ স্বরধ্বনি লোপ পেয়ে হয়েছে ‘বস্তি’ (ব+অ+স+ত+ই) 

ব্যঞ্জন বিকৃতি:
- শব্দ-মধ্যে কোনাে কোনাে সময় কোনাে ব্যঞ্জন পরিবর্তিত হয়ে নতুন ব্যঞ্জনধ্বনি ব্যবহৃত হয়।
- একে বলে ব্যঞ্জন বিকৃতি।
যেমন:
- কবাট > কপাট।
- ধোবা > ধোপা।
- মাঝে মাঝে উচ্চারণের সুবিধার জন্য সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝখানে স্বরধ্বনি আসে। একে বলা হয় মধ্য স্বরাগম বা বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি।
যেমন ঃ 
- ই স্বরধ্বনির আগমন- প্রীতি > পিরীতি, স্নান > সিনান, ক্লিপ > কিলিপ, ফিল্ম > ফিলিম ইত্যাদি।
শব্দের মধ্যে দুটি ব্যঞ্জনের পরস্পর পরিবর্তন ঘটলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে।
যেমনঃ
- ইংরেজি বাক্‌স > বাংলা বাস্‌ক,
- পিশাচ > পিচাশ,
- রিকসা্‌ > রিস্‌কা, 
- জাপানি রিক্‌সা > বাংলা রিস্‌কা,
- লাফ > ফাল।
দ্বিত্ব ব্যঞ্জন বা ব্যঞ্জনদ্বিত্ব:
- কখনো কখনো জোর দেয়ার জন্য শব্দের অন্তর্গত ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়, একে দ্বিত্ব ব্যঞ্জন বা ব্যঞ্জনদ্বিত্ব বলে।
যেমন:
- পাকা > পাক্কা,
- সকাল > সক্কাল,
তেমনিভাবে,
- বড় > বড্ড,
- কিছু > কিচ্ছু  ইত্যাদি।

অন্যদিকে,
সমীভবন:
- শব্দমধ্যস্থ দুটি ভিন্ন ধ্বনি একে অপরের প্রভাবে অল্প-বিস্তর সমতা লাভ করে। এ ব্যাপারকে বলা হয় সমীভবন।
যেমন:
- জন্ম > জম্ম।

ব্যঞ্জন বিকৃতি:
- শব্দ-মধ্যে কোনাে কোনাে সময় কোনাে ব্যঞ্জন পরিবর্তিত হয়ে নতুন ব্যঞ্জনধ্বনি ব্যবহৃত হয়।
- একে বলে ব্যঞ্জন বিকৃতি।
যেমন:
- কবাট > কপাট।

অভিশ্রুতি:
- বিপর্যস্ত স্বরধ্বনি পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সাথে মিলে গেলে এবং তদনুসারে পরবর্তী স্বরধ্বনির পরিবর্তন ঘটলে তাকে অভিশ্রুতি বলে।
যেমন
- শুনিয়া > শুনে।

উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম-দশম শ্রেণি।
সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ:
- দ্রুত উচ্চারণের জন্য শব্দের আদি, অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোনো স্বরধ্বনির লোপকে বলা হয় সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ। যেমন-অলাবু ˃ লাবু, আটমেসে ˃ আটাসে, কুটুম্ব ˃ কুটুম, জানালা ˃ জান্লা ইত্যাদি।

- আদিস্বর লোপ: শব্দের শুরুর স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে আদি স্বরালোপ বলে। যেমন, অলাবু ˃ লাবু ˃ লাউ; উদ্ধার ˃ উধার ˃ ধার ইত্যাদি।
- মধ্যস্বর লোপ: শব্দের মধ্যবর্তী কোন স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে মধ্য স্বরলোপ বলে। যেমন, গামোছা ˃ গামছা, অগুরু˃ অগ্রু, সুবর্ণ˃ স্বর্ণ।
- অন্ত্যস্বর লোপ: শব্দের শেষের স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে অন্ত্য স্বরলোপ বলে। যেমন, আশা˃ আশ, আজি˃ আজ, চারি˃ চার, সন্ধ্যা˃ সঞ্ঝ্যা ˃ সাঁঝ, লজ্জা ˃ লাজ, চাকা ˃ চাক ইত্যাদি।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
ব্যঞ্জন বিকৃতিঃ
- শব্দের মধ্যে কোনো কোনো সময় কোনো ব্যঞ্জন পরিবর্তিত হয়ে নতুন ব্যঞ্জনধ্বনি ব্যবহৃত হয়। একে বলে ব্যঞ্জন বিকৃতি। যেমন: কবাট > কপাট, ধোবা > ধোপা, ধাইমা > লাইমা।
সঠিক উত্তর: 0 | ভুল উত্তর: 0