কারক ও বিভক্তি (403 টি প্রশ্ন )
যখন একটি ক্রিয়ার দুটি কর্মপদ থাকে, তখন তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে।

এই দুটি কর্মের মধ্যে:
- প্রাণীবাচক কর্মটিকে গৌণ কর্ম বলে।
- বস্তুবাচক কর্মটিকে মুখ্য কর্ম বলে।

প্রদত্ত বাক্যে, "দেখাচ্ছেন" ক্রিয়ার দুটি কর্ম হলো ‘শিশুকে’ (প্রাণীবাচক) এবং ‘চাঁদ’ (বস্তুবাচক)।

সুতরাং, ‘শিশুকে’ হলো গৌণ কর্ম।
কারক নির্ণয়:
- বাক্যটির অর্থ হলো ‘টাকার দ্বারা কী না হয়?’। ক্রিয়া ‘হয়’-কে যদি প্রশ্ন করা হয় ‘কীসের দ্বারা হয়?’, উত্তর আসে—‘টাকার দ্বারা’।
- যেহেতু ‘টাকা’ এখানে উপায় বা মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে, তাই এটি করণ কারক।

বিভক্তি নির্ণয়:
- ‘টাকা’ মূল শব্দের সাথে ‘য়’ যুক্ত হয়ে ‘টাকায়’ হয়েছে।
- ‘এ’, ‘য়’, ‘তে’—এইগুলো সপ্তমী বিভক্তির চিহ্ন।

সুতরাং, ‘টাকায়’ পদটি করণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
- বাংলা ব্যাকরণে, ‘দ্বারা’, ‘দিয়া’, ‘কর্তৃক’—এই অনুসর্গগুলো তৃতীয়া বিভক্তির চিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- এগুলো সাধারণত করণ কারকে (উপায় বা মাধ্যম বোঝাতে) এবং কর্মবাচ্যের কর্তার সাথে যুক্ত হয়।
- যেমন: "লাঠি দ্বারা সাপটি মারা হলো।" এখানে ‘দ্বারা’ তৃতীয়া বিভক্তি নির্দেশ করছে।
- 'রাজার রাজ্য' বলতে রাজার অধিকারভুক্ত রাজ্যকে বোঝানো হচ্ছে।
- এখানে রাজা এবং রাজ্যের মধ্যে অধিকার বা মালিকানার সম্পর্ক বিদ্যমান।
- কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর উপর অন্য কারো মালিকানা বা কর্তৃত্ব বোঝালে তাকে অধিকার সম্বন্ধ পদ বলে।
- যেমন: 'আমার বই', এখানে বইটির উপর আমার অধিকার প্রকাশ পাচ্ছে।
যদি কোনো ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য অন্য ক্রিয়ার কোনোরূপ ভাবের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে, তবে তাকে ভাবাধিকরণ বলে। ভাবাধিকরণে সর্বদাই সপ্তমী বিভক্তির প্রয়োগ হয় বলে একে ‘ভাবে সপ্তমী’ বলা হয়। যেমন-
- সূর্যোদয়ে অন্ধকার দূরীভূত হয়।
- জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ।
- কান্নায় শোক কমে'
- হাসিতে মুক্তা ঝরে।
- একটি বাক্যে যখন দুটি কর্ম থাকে, তখন তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলা হয়।
- এই দুটি কর্মের মধ্যে ব্যক্তিবাচক কর্মটিকে গৌণকর্ম বলা হয়।
- বস্তুবাচক কর্মটিকে বলা হয় মুখ্য কর্ম।
- গৌণকর্মের সাথে সাধারণত '-কে' বা '-রে' বিভক্তি যুক্ত হয়, যেমন: "বাবা আমাকে একটি কলম কিনে দিয়েছেন।"
- এখানে 'আমাকে' হলো গৌণকর্ম এবং 'কলম' হলো মুখ্য কর্ম।
- যেসব শব্দের শেষে 'অ' ধ্বনি থাকে (অ-কারান্ত) বা ব্যঞ্জনবর্ণ থাকে (ব্যঞ্জনান্ত), সেগুলোর সাথে ষষ্ঠী বিভক্তি হিসেবে 'এর' যুক্ত হয়।
- এটি সম্বন্ধ পদ গঠনে ব্যবহৃত হয়।
- উদাহরণস্বরূপ: 'কলম' (ব্যঞ্জনান্ত) শব্দটি 'কলম + এর = কলমের' হয়।
- একইভাবে, 'বই' (অ-কারান্ত) শব্দটি 'বই + এর = বইয়ের' হয়।
- কিন্তু স্বরান্ত শব্দের শেষে শুধু 'র' যুক্ত হয়, যেমন: 'মা + র = মার'।
কর্মকারক:
- যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে, তাকে কর্মকারক বলে।

যেমন:
- ঘোড়া গাড়ি টানে।
- শাহেদ বই পড়ে।
→  বাক্য দুটিতে 'ঘোড়া' এবং 'শাহেদ' যথাক্রমে 'গাড়ি' এবং 'বই'-কে আশ্রয় করে 'টানা' এবং 'পড়া' ক্রিয়া সম্পন্ন করে। সুতরাং 'গাড়ি' এবং 'বই' কর্মকারক

কর্মকারকে বিভিন্ন বিভক্তির প্রয়োগ:
প্রথমা বিভক্তি: পুলিশ ডাক।
দ্বিতীয়া বিভক্তি: আমি তাকে চিনি।
ষষ্ঠী বিভক্তি: ছেলেটি বলের সঙ্গে যুদ্ধ করে।
সপ্তমী বিভক্তি: জিজ্ঞাসিব জনে জনে
• কর্তৃকারক:
বাক্যের যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের সাহায্যে ক্রিয়া নিষ্পন্ন হয়, তাকে বলা হয় কর্তৃকারক।
যেমন- রাজু কলেজে যাচ্ছে।
[এ বাক্যের কর্তা হলো বিশেষ্য পদ রাজু । অতএব রাজু হলো কর্তৃকারক।]

কর্তৃকারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার:
• প্রথমা শূন্য বা অ বিভক্তি: খোকন বই পড়ে।
• দ্বিতীয়া বা কে বিভক্তি: মাসুমকে যেতে হবে।
• তৃতীয় বা দ্বারা বিভক্তি: ফেরদৌসি কর্তৃক শাহনামা রচিত হয়েছে।

• ষষ্ঠী বা র বিভক্তি: আমার যাওয়া হয়নি।

• সপ্তমী বা এ, য়, তে বিভক্তি:
- গাঁয়ে মানে না, আপনি মোড়ল।
- বাপে না জিজ্ঞাসে, মায়ে না সম্ভাষে।
- পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়।
- বাঘে-মহিষে খানা একঘাটে খাবেন।

য়-বিভক্তি: ঘোড়ায় গাড়ি টানে।

•তে-বিভক্তি:
- গরুতে দুধ দেয়।
- বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দিবে কীসে?

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
- ক্রিয়া সম্পাদনের স্থানকে আধারাধিকরণ কারক বলে।
- যখন কোনো বিশাল স্থানের একটি নির্দিষ্ট অংশে বা খণ্ডাংশে ক্রিয়াটি সংঘটিত হয়, তখন তাকে ঐকদেশিক আধারাধিকরণ বলে।
- 'ঐকদেশিক' শব্দটি 'একদেশ' বা 'অংশ' সম্পর্কিত অর্থ প্রকাশ করে।
- উদাহরণ: "বনে বাঘ থাকে।" (বনের কোনো একটি অংশে বাঘ থাকে, পুরো বন জুড়ে নয়)।
- আরেকটি উদাহরণ: "পুকুরে মাছ আছে।" (পুকুরের কোনো এক অংশে মাছ আছে)।
- বাংলা ব্যাকরণের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, 'সম্প্রদান কারক' কে আলাদা কারক হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।
- স্বত্ব ত্যাগ করে কিছু দান করা বোঝালে, যাকে দান করা হয়, সেই পদটিকে আগে সম্প্রদান কারক বলা হতো।
- বর্তমানে এটিকে গৌণকর্ম হিসেবে কর্ম কারকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- উদাহরণ: "দরিদ্রকে ধন দাও।" এখানে 'দরিদ্রকে' পদটি কর্ম কারক (গৌণকর্ম)।
- সুতরাং, 'সম্প্রদান কারক' এর ধারণাটি 'কর্ম কারক' দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে।
- ক্রিয়া পদের সাথে সম্পর্ক না রেখে যে নামপদ অন্য নামপদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে, তাকে সম্বন্ধ পদ বলে।
- সম্বন্ধ পদে সাধারণত ষষ্ঠী বিভক্তি যুক্ত হয়।
- বাংলায় ষষ্ঠী বিভক্তির চিহ্ন হলো '-র' এবং '-এর'।
- উদাহরণ: "হাসানের ভাই" (হাসান + এর), "দেশের মানুষ" (দেশ + এর), "আমার বই" (আমা + র)।
- এই বিভক্তিগুলো মালিকানা, অধিকার বা সম্পর্ক বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

- বাংলা ভাষায় শব্দ-বিভক্তি প্রধানত সাত প্রকার।
- এই বিভক্তিগুলো কারকভেদে শব্দের শেষে যুক্ত হয়ে বাক্যের অর্থ স্পষ্ট করে।
- বিভক্তিগুলো হলো: প্রথমা, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী এবং সপ্তমী।
- প্রথমা বিভক্তি সাধারণত কর্তা কারকে বসে এবং এর চিহ্ন হলো শূন্য বিভক্তি (০) বা -এ, -তে।
- দ্বিতীয়া ও চতুর্থী বিভক্তির চিহ্ন -কে, -রে; যা কর্ম ও সম্প্রদান কারকে ব্যবহৃত হয়।
- তৃতীয়া বিভক্তির চিহ্ন -দ্বারা, -দিয়া; যা করণ কারকে বসে।
- পঞ্চমী বিভক্তির চিহ্ন -হতে, -থেকে; যা অপাদান কারকে বসে।
- ষষ্ঠী বিভক্তির চিহ্ন -র, -এর; যা সম্বন্ধ পদে ব্যবহৃত হয়।
- সপ্তমী বিভক্তির চিহ্ন -এ, -য়, -তে; যা অধিকরণ কারকে বসে।
অনেক ব্যাকরণবিদ মনে করেন যে, এটি আসলে কর্ম কারকেরই একটি বিশেষ রূপ, যেখানে গৌণ কর্ম হিসেবে যাকে দান করা হয় সে থাকে।
তাই ব্যাকরণবিদদের মধ্যে সম্প্রদান কারক নিয়ে সবসময়ই বিতর্ক ছিল। বিভিন্ন সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এবং রাজা রামমোহন রায় - সকলেই কোনো না কোনোভাবে এই কারকের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অথবা এর বিকল্প ব্যাখ্যার কথা বলেছিলেন।
- যে সাধন/উপকরণ দ্বারা ক্রিয়া সম্পাদিত হয়, তাকে করণ কারক বলে। করণ কারকে সাধারণত ৭মী বিভক্তি ("এ", "য়", "দ্বারা", "করতে" ইত্যাদি) যুক্ত হয়।

"এ সুতায় কাপড় হয় না।"
- এখানে "সুতায়" শব্দটি সুতা (উপকরণ) নির্দেশ করছে, যা কাপড় তৈরি করার সাধন।
- যেহেতু ক্রিয়া (হয়) সম্পাদনের জন্য সুতা ব্যবহৃত হচ্ছে, তাই এটি করণ কারক।
- "সুতায়" শব্দটি ৭মী বিভক্তি ("এ"/"য়") দ্বারা গঠিত।
বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে কর্তৃকারক বলে। যেমন: মেয়েরা ফুল তোলে, গাঁয়ে মানে না, আপনি মোড়ল, হামিদ বই পড়ে, পাতাটির নিচে বসে আছে ভোরের দোয়েল পাখি।
- যে স্থানে বা যে সময়ে ক্রিয়া সম্পাদিত হয় তাকে অধিকরণ কারক বলে। যেমনঃ ছেলেরা মাঠে খেলে। ছাত্রীরা পাঠাগারে পড়ে। বাক্যে যে পদে ক্রিয়ার আধারকে বোঝায় তাকে বলে অধিকরণ কারক। ক্রিয়া পদকে ধরে কোথায়, কোন স্থানে, কখন, কোন সময়, কবে, কোন বিষয়ে বা ব্যাপারে এসব দিয়ে প্রশ্ন করলে তার উত্তরে অধিকরণ কারক পাওয়া যায়।
» ছাত্ররা ক্লাসে পড়ে। কোথায় পড়ে? উঃ- ক্লাসে। - “ক্লাসে” অধিকরণ কারক।
» তারা সকালে পড়ে। কখন পড়ে? উঃ - সকালে। “সকালে” অধিকরণ কারক।
- অপাদান কারক হলো যে কারক থেকে কোনো কিছু বিচ্যুত, গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত, উৎপন্ন বা রক্ষিত হয় অথবা যা দেখে কেউ ভীত হয়।
- এখানে "পঙ্গপাল" (ক্রিয়ার কর্তা) "দেশ" থেকে চলে গেছে, অর্থাৎ দেশ থেকে দূরীভূত/বিচ্যুত হয়েছে। তাই "দেশ" অপাদান কারক।

অপাদান কারক চেনার পদ্ধতি:
ক্রিয়াকে "কোথা থেকে?", "কি থেকে?" বা "কিসের থেকে?" দিয়ে প্রশ্ন করলে অপাদান কারক পাওয়া যায়।

প্রশ্ন: "পঙ্গপাল কোথা থেকে চলে গেছে?"
উত্তর: "দেশ থেকে" → সুতরাং, এটি অপাদান কারক।
"দেশ" শব্দটি ৫মী বিভক্তি (থেকে/হতে) যুক্ত হয়ে "দেশ থেকে" রূপে ব্যবহৃত হয়েছে।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
- যে সাধন/উপকরণ দ্বারা ক্রিয়া সম্পাদিত হয়, তাকে করণ কারক বলে। করণ কারকে সাধারণত ৭মী বিভক্তি ("এ", "য়", "দ্বারা", "করতে" ইত্যাদি) যুক্ত হয়।

"এ সুতায় কাপড় হয় না।" 
- এখানে "সুতায়" শব্দটি সুতা (উপকরণ) নির্দেশ করছে, যা কাপড় তৈরি করার সাধন।
- যেহেতু ক্রিয়া (হয়) সম্পাদনের জন্য সুতা ব্যবহৃত হচ্ছে, তাই এটি করণ কারক।
- "সুতায়" শব্দটি ৭মী বিভক্তি ("এ"/"য়") দ্বারা গঠিত।
- যে পদটি কাজের উপর প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলে, অর্থাৎ কাজটি যার ওপর সম্পন্ন হচ্ছে, তাকে কর্ম কারক বলে।

C) "সে সম্পত্তি নষ্ট করছে।"
এখানে "সম্পত্তি" হলো কর্ম, কারণ এটি "নষ্ট করছে" ক্রিয়ার দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে।
কর্মকারকে বিভক্তি ("কে") লোপ পেয়েছে, কিন্তু বোঝা যাচ্ছে যে "সম্পত্তিকে নষ্ট করছে"।

অন্যান্য বিকল্প বিশ্লেষণ:
A) "পুকুরে মাছ আছে।"
এটি অধিকরণ কারক (স্থান বা সময় নির্দেশ করে)।

B) "আকাশে চাঁদ উঠেছে।"
এটি অধিকরণ কারক।

D) "সে মোবাইলে পড়াশোনা করছে।"
এখানে "মোবাইল" একটি সাহায্যকারী মাধ্যম - করণ কারক
- বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে, তাকে কর্তৃকারক (কর্তা কারক) বলে। কর্তৃকারক হলো বাংলা ব্যাকরণের একটি মৌলিক কারক, যা ক্রিয়ার কর্তা (যে কাজটি করে) নির্দেশ করে।
- কর্তৃকারকে সাধারণত প্রথমা বিভক্তি (টি, টা, রা, এঁরা ইত্যাদি) যুক্ত থাকে বা বিভক্তি লোপ পেতে পারে।

উদাহরণ:
"রাহুল বই পড়ে।"
এখানে "রাহুল" কর্তৃকারক, কারণ সে "পড়ে" ক্রিয়াটি সম্পন্ন করছে।

"পাখিটি উড়ছে।"
এখানে "পাখিটি" কর্তৃকারক, কারণ এটি "উড়ছে" ক্রিয়ার কর্তা।

"আমরা খেলতে যাব।"
এখানে "আমরা" (সর্বনাম পদ) কর্তৃকারক, কারণ এটি "যাব" ক্রিয়ার কর্তা।
- যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে ,তাকেই কর্ম কারক বলে। ক্রিয়ার বিষয়কে কর্ম বলে ।
- ক্রিয়ার সাথে কি বা কাকে যোগ করে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় ,তাই কর্মকারক ।
যেমন:
- আমি একটা পাখি দেখছি ।
- এখানে যদি প্রশ্ন করা হয় , কি দেখেছি ? তাহলে উত্তর পাই 'পাখি'।
- বাক্যের কর্তাকেই বলা হয় কর্তৃকারক ।
- অর্থাৎ বাক্যে ক্রিয়াটি যার দ্বারা সম্পাদিত হয় তাকে কর্তৃকারক বলে ।
- বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে তা ক্রিয়ার কর্তা বা কর্তৃকারক ।
- বাক্যের ক্রিয়াকে কে/কারা দিয়ে প্রশ্নের উত্তরে কর্তৃকারক পাওয়া যায় ।
- যেমন: ''টাকায় টাকা আনে''- এই বাক্যে কে টাকা আনে প্রশ্ন করলে উত্তর আসে ‘টাকায়’ তাই তা কর্তৃকারক। এবং এর সাথে যুক্ত হয়েছে ৭মী বিভক্তি। তাই উত্তর হবে কর্তৃকারকে ৭মী।
- কর্তৃকারকে ৭মী’র আরো উদাহরণ - ঘোড়ায় গাড়ি টানে; গাঁয়ে মানে না, আপনি মোড়ল।

- আবার 'টাকায় টাকা হয়' অপাদান কারক।
- কেননা এই বাক্যে টাকা থেকে টাকা উৎপন্ন হওয়া বোঝাচ্ছে। তাই এটি অপাদান কারক।

যা থেকে কিছু গৃহীত ,জাত ,বিরত , আরম্ভ , দূরীভূত ও রক্ষিত হয় এবং যা দেখে কেউ ভীত হয় তাকেই অপাদান কারক বলে, যেমন - তিল থেকে তৈল হয় । পাপে বিরত হও ।
ক্রিয়া সম্পাদনের কাল (সময়) এবং আধারকে অধিকরণ কারক বলে।
- অধিকরণ কারকে সপ্তমী অর্থাৎ 'এ', 'য়', 'তে' ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়।
যথাঃ
- আধার (স্থান) : আমরা রোজ স্কুলে যাই। এ বাড়িতে কেউ নেই
- কাল (সময়) : প্রভাতে সূর্য ওঠে।
- ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র, উপক্ররণ বা সহায়ককেই করণ কারক বলে।
- ক্রিয়াপদকে ‘কিসের দ্বারা’ বা ‘কি উপায়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তরটি পাওয়া যায়, তাই করণ কারক।
- যেমন- ফুলে ফুলে ঘর ভরেছে। প্রদত্ত বাক্যের ক্রিয়াকে যদি প্রশ্ন করা হয় ‘কীসের দ্বারা ঘর ভরেছে?? তাহলে উত্তর পাই ‘ফুল’ ।
- সুতরাং ‘ফুল’ করণ কারক এবং এর সাথে ৭মী বিভক্তি (ফুল+এ) যুক্ত হওয়ায় এটি করণে ৭মী বিভক্তি ।

কর্ম কারক: ক্রিয়াকে 'কী' বা 'কাকে' দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তা কর্ম কারক।
সম্প্রদান কারক: স্বত্ব ত্যাগ করে (নিঃস্বার্থভাবে) 'কাকে' দান করা হচ্ছে, তা হচ্ছে সম্প্রদান কারক।

প্রশ্নের বাক্যটি হলো: 'ভিক্ষুককে ভিক্ষা দাও।'

এখানে, 'দাও' ক্রিয়াকে প্রশ্ন করুন:

'কী দাও?' - উত্তর আসে 'ভিক্ষা'।
যেহেতু 'কী' দিয়ে প্রশ্ন করে 'ভিক্ষা' শব্দটি পাওয়া যাচ্ছে, তাই এটি কর্ম কারক।

- প্রশ্নটি যদি 'ভিক্ষুক' নিয়ে করা হতো তাহলে সম্প্রদান কারক উত্তর হতো।


ক্রিয়াকে "কাকে" বা "কী" দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, সেটি কর্মকারক।
এখানে ক্রিয়া হলো "দেখলেও" (দেখা)।
প্রশ্ন: কাকে দেখলেও পাপ?
উত্তর: তোমায়।
সুতরাং, "তোমায়" পদটি কর্মকারক।

২. বিভক্তি নির্ণয়:
"তোমায়" শব্দটি এসেছে "তুমি" সর্বনাম থেকে। "তুমি" শব্দের কর্মকারকের রূপ হলো "তোমাকে" বা "তোমায়"।

"তোমাকে" পদে "কে" বিভক্তি যুক্ত হয়েছে, যা দ্বিতীয়া বিভক্তি।
"তোমায়" পদে "য়" বিভক্তি যুক্ত হয়েছে।

বাংলা ব্যাকরণে কর্মকারকে সাধারণত শূন্য, কে, রে, এ, য়, তে ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়।
"আমায়", "তোমায়" এই রূপগুলোতে "য়" বিভক্তি কর্মকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তির কাজ করে। যেমন: "আমি তোমায় চিনি।" এখানে "তোমায়" কর্মকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি।

যদিও "এ", "য়", "তে" বিভক্তিগুলো সপ্তমী বিভক্তিরও চিহ্ন, কর্মকারকের সঙ্গে যুক্ত হলে এবং বস্তুটি যদি ক্রিয়ার সরাসরি কর্ম হয়, তবে সেগুলোকে দ্বিতীয়া বিভক্তি হিসেবেই গণ্য করা হয়, অথবা বিশেষভাবে "কর্মে সপ্তমী" বলা হয় যদি স্থান বা আধারের অর্থ প্রকট থাকে। কিন্তু "তোমায় দেখা" এই ক্ষেত্রে "তোমায়" সরাসরি কর্ম, কোনো স্থান বা আধার বোঝাচ্ছে না।

প্রদত্ত অপশন গুলির মধ্যে:
A) কর্মে সপ্তমী
B) কর্মে দ্বিতীয়া

যেহেতু "তোমায়" পদটি "দেখা" ক্রিয়ার সরাসরি কর্ম এবং "য়" বিভক্তি এখানে "কে" বিভক্তির মতোই কর্মের দ্যোতনা করছে, তাই এটি কর্মকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি হিসেবে গণ্য হওয়াই অধিক যুক্তিযুক্ত।

সঠিক উত্তর হলো: B) কর্মে দ্বিতীয়া

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
যা থেকে কিছু বিচ্যূত, গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত ও রক্ষিত হয় এবং যা দেখে কেউ ভীত হয়, তাকেই অপাদান কারক বলে।
যেমন -
- গাছ থেকে পাতা পড়ে।
- পাপে বিরত হও।
-লোকমুখে এই কথা শুনেছি
সঠিক উত্তর: 0 | ভুল উত্তর: 0