নিত্য মূর্ধন্য-ষ কোন শব্দে বর্তমান?
Correct Answer: Option D
বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধন্য-ষ ধ্বনির ব্যবহার নেই। তাই দেশি, তদ্ভব ও বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য-ষ লেখার প্রয়োজন হয় না। কেবল কিছু তৎসম শব্দে ষ-এর প্রয়োগ রয়েছে। যে-সব তৎসম শব্দে ‘ষ রয়েছে তা বাংলায় অবিকৃত আছে। তৎসম শব্দের বানানে মূর্ধন্য ষ-এর ব্যবহারের নিয়মকে ষত্ব বিধান বলে।
ষ ব্যবহারের নিয়ম
১. অ, আ ভিন্ন অন্য স্বরধ্বনি এবং ক ও র-এর পরে প্রত্যয়ের স, ষ হয়। যেমন— ভবিষ্যৎ (ভ্ + অ + ব্ + ই +ৎ) এখানে ব-এর পরে ই, মুমূর্ষু, চক্ষুষ্মান, চিকীর্ষা ইত্যাদি। এ নিয়মের কারণেই ‘পুরস্কার’ বানানে শুধু ‘র্+অ’ থাকায় ‘স’ হয় কিন্তু ‘পরিষ্কার’ বানানে ‘র+ই’ থাকায় ‘ষ’ হয়। সেভাবেই তিরস্কার, আবিষ্কার, ধনুষ্টঙ্কার, নিষ্ঠুর, চতুষ্কোণ ইত্যাদি।
২. ই-কারান্ত এবং উ-কারান্ত উপসর্গের পর কতগুলো ধাতুতে ‘ষ’ হয়। যেমন – অভিসেক >অভিষেক, সুসুপ্ত > সুষুপ্ত, অনুসঙ্গ > অনুষঙ্গ, প্রতিসেধক > প্রতিষেধক, প্রতিস্থান > প্রতিষ্ঠান, অনুস্থান >অনুষ্ঠান, বিসম > বিষম, সুসমা > সুষমা ইত্যাদি।
৩. ‘ঋ’এবং ঋ কারের পর ‘ষ’ হয়। যেমন- ঋষি, কৃষক, উৎকৃষ্ট, দৃষ্টি, সৃষ্টি ইত্যাদি।
৪. তৎসম শব্দে ‘র’-এর পর ‘ষ’ হয়। যেমন- বর্ষা, ঘর্ষণ, বর্ষণ।
৫. ট-বর্গীয় ধ্বনির সঙ্গে ‘ষ’ যুক্ত হয়। যথা : কষ্ট, স্পষ্ট, নষ্ট, কাষ্ঠ, ওষ্ঠ ইত্যাদি।
৬. আরবি, ফারসি, ইংরেজি ইত্যাদি বিদেশি ভাষা থেকে আগত শব্দে ষ হয় না। এ সম্বন্ধে সতর্ক হতে হবে। যেমন- জিনিস, পোশাক, মাস্টার, পোস্ট ইত্যাদি। খ. সংস্কৃত ‘সাৎ প্রত্যয়যুক্ত পদেও ষ হয় না। যেমন- অগ্নিসাৎ, ধূলিসাৎ, ভূমিসাৎ ইত্যাদি।
৭. কতগুলো শব্দে স্বভাবতই ‘ষ’ হয়। যেমন-
আষাঢ় ঈষৎ ঔষুধ উষা
বিষ বিশেষ বিশেষণ ভাষা ।।
প্রত্যুষ পাষাণ পৌষ রোষ
মেষ মহিষ মুষিক কোষ ।।
ভাষণ পুরুষ পৌরুষ ঘর্ষণ
শোষোণ শেষ তোষণ বর্ষণ।।
ঈষৎ ঈর্ষা উষর গ্রীষ্ম
ভাষা ভূষণ ভিষক ভীষ্ম ।।
ষোড়শ ষণ্ড সষর্প হর্ষ
গণ্ডূষ দোষ প্রদোষ বর্ষ।।
মহিষী শ্লেষ শ্লেষা শেষ
ষট তুষ ওষধি দ্বেষ।।
ভাষ্য ভূষ্য মানুষ বাষ্প
কৃষাণ কৃষি পৌরুষ পুষ্প।।
তোষণ ভূষণ ঈর্ষা(র) ভাষণ
বিশেষ্য ঘোষণা পাষণ্ড শোষোণ।।
ষোড়শ মহিষ ষড়যন্ত্র ভীষণ
এখন আর কি করা- সবই দূষণ।।
কিছু অর্থ
মুষিক- ইঁদুর।
ভাষ্য- ব্যাখ্যা।
গণ্ডূষ- এক গাল বা দুই হাতের কোষ মিলে সমপরিমাণ পানি।
প্রদোষ- সন্ধ্যা।
Download our app for free and access thousands of MCQ questions with detailed solutions