সমাস (744 টি প্রশ্ন )
- 'অসহযোগ' শব্দটির ব্যাসবাক্য হলো 'ন সহযোগিতা'।
- এখানে 'অ' একটি না-বাচক বা নঞ অব্যয়, যা 'নয়' বা 'না' অর্থ প্রকাশ করে।
- তৎপুরুষ সমাসে পরপদের অর্থ প্রধান হয়।
- 'অসহযোগ' শব্দটিতে 'সহযোগিতা'র অভাব বোঝানো হচ্ছে, অর্থাৎ পরপদ 'সহযোগ'-এর অর্থই প্রধান থাকছে, কিন্তু 'নঞ' অব্যয়টি তার না-বাচক অর্থ প্রকাশ করছে।
- যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদে নঞ বা না-বাচক অব্যয় (যেমন - অ, ন, না, নিঃ, বি, বে, গর) বসে এবং পরপদের অর্থকে নেতিবাচক করে তোলে, তাকে নঞ তৎপুরুষ সমাস বলে।
- তাই 'অসহযোগ' একটি নঞ তৎপুরুষ সমাস
- ক্রিয়ার পারস্পরিকতা বা একে অপরের সাথে একই কাজ করা বোঝালে ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস হয়।
- এই সমাসে পূর্বপদে 'আ' এবং পরপদে 'ই' যুক্ত হয়।
- 'হাতাহাতি' বলতে একে অপরের সাথে হাতে হাতে যুদ্ধ করা বোঝাচ্ছে, যা একটি পারস্পরিক ক্রিয়া।
- এরকম আরও উদাহরণ হলো- কানে কানে যে কথা = কানাকানি, লাঠিতে লাঠিতে যে লড়াই = লাঠালাঠি।
- সমানাধিকরণ বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদ বিশেষণ এবং পরপদ বিশেষ্য হয়।
- 'মহান আত্মা যার' - এই ব্যাসবাক্যে 'মহান' শব্দটি বিশেষণ এবং 'আত্মা' শব্দটি বিশেষ্য।
- এখানে 'মহান' এবং 'আত্মা' পদ দুটি একত্রে তৃতীয় একজন ব্যক্তিকে বোঝাচ্ছে, তাই এটি বহুব্রীহি সমাস।
- যেহেতু পূর্বপদটি বিশেষণ, তাই এটি সমানাধিকরণ বহুব্রীহি সমাসের উদাহরণ।
- বহুব্রীহি সমাসে সমস্যমান পদগুলো কোনোটিই প্রধান না হয়ে, তৃতীয় কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে বোঝায়।
- এই তৃতীয় পদকে বোঝানোর জন্য ব্যাসবাক্যে সাধারণত সম্বন্ধ পদ 'যার' বা 'যাহার' এবং কারকবাচক শব্দ 'যাতে', 'যাহাতে' ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।
- যেমন: দশ আনন যার = দশানন; নেই জ্ঞান যার = অজ্ঞান।

অন্যদিকে,
- 'এবং', 'ও' দ্বন্দ্ব সমাসে 
- 'যে', 'যিনি', 'ন্যায়' ইত্যাদি কর্মধারয় সমাসে ব্যবহৃত হয়।
সমাহার বা মিলন অর্থে সংখ্যাবাচক শব্দের সাথে বিশেষ্য পদের যে সমাস হয়, তাকে দ্বিগু সমাস বলে। দিশু সমাসে পরপদের অর্থের প্রাধান্য থাকে। যেমন:
- চৌ (চার) রাস্তার সমাহার = চৌরাস্তা;
- তিন কালের সমাহার = ত্রিকাল।
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় না, তাই অলুক তৎপুরুষ সমাস। যেমন:
গরুর গাড়ি = গরুর গাড়ি;
কলুর বলদ = কলুর বলদ।
গাছে পাকা = গাছপাকা (৭মী তৎপুরুষ সমাস);
গ্রাম থেকে ছাড়া = গ্রামছাড়া (৫মী তৎপুরুষ সমাস);
ধানের ক্ষেত = ধানক্ষেত (৬ষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস)।
• সমাহার বা সমষ্টি বা মিলন অর্থে সংখ্যাবাচক শব্দের সঙ্গে বিশেষ্য পদের যে সমাস হয়, তাকে দ্বিগু সমাস বলে।
• দ্বিগু সমাসে সমাসনিষ্পন্ন পদটি বিশেষ্য পদ হয়। তবে অনেক ব্যাকরণবিদ দ্বিগু সমাসকে কর্মধার‍য় সমাসের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
- পূর্বপদের পঞ্চমী বিভক্তি (হইতে, থেকে, চেয়ে) লোপ পেয়ে যে সমাস হয়, তাকে পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস বলে।
- এখানে 'জেল থেকে মুক্ত' বাক্যে 'থেকে' অনুসর্গটি লোপ পেয়ে 'জেলমুক্ত' সমস্তপদটি গঠিত হয়েছে।
- 'হইতে', 'থেকে', 'চেয়ে' ইত্যাদি অনুসর্গ পঞ্চমী বিভক্তির চিহ্ন হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
- যেহেতু এখানে পঞ্চমী বিভক্তির চিহ্ন লোপ পেয়েছে, তাই এটি পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস।
- এই ধরনের সমাসে সাধারণত চ্যুত, আগত, ভীত, গৃহীত, বিরত, মুক্ত, উত্তীর্ণ, পালানো ইত্যাদি পরপদের সঙ্গে পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস হয়।
- পূর্বপদে তৃতীয়া বিভক্তি (দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক ইত্যাদি) লোপ পেয়ে যে সমাস হয় তাই তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস
- যেমন: মেঘ দ্বারা শূন্য=মেঘশূন্য, মন দ্বারা গড়া = মনগড়া

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
'বিপদকে আপন্ন = বিপদাপন্ন'। এটি দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাসের উদাহরণ।
পূর্বপদের দ্বিতীয়া বিভক্তি (কে, রে, এরে) ইত্যাদি লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস বা কর্ম তৎপুরুষ বলে।
যথা:
- দুঃখকে প্রাপ্ত= দুঃখপ্রাপ্ত,
- বিপদকে আপন্ন= বিপদাপন্ন,
- পরলোকে গত= পরলোকগত,
- পুঁথিতে গত= পুঁথিগত।
- সাধারণ গুণের উল্লেখ না করে উপমেয় পদের সাথে উপমানের যে সমাস হয়, তাকেই উপমিত কর্মধারয় সমাস বলে।
- এতে দুটো পদই বিশেষ্য হয় এবং উপমেয় পদটি পূর্বে বসে।
- যেমন: চাঁদের মতো মুখ = চাঁদমুখ । প্রদত্ত উদাহরণে 'চাঁদ' ও 'মুখ'- দুটোই বিশেষ্য।
- যে কর্মধারয় সমাসে ব্যাসবাক্যের মাঝখানের এক বা একাধিক পদ লোপ পায়, তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলে।
- এই সমাসে ব্যাসবাক্যের মধ্যবর্তী পদটি সমস্তপদের অর্থকে স্পষ্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- উদাহরণস্বরূপ, 'সিংহ চিহ্নিত আসন = সিংহাসন'।
- এখানে 'চিহ্নিত' মধ্যপদটি লোপ পেয়ে 'সিংহাসন' সমস্তপদটি গঠিত হয়েছে।
- বিশেষ্য ও বিশেষণ পদ মিলে যে সমাস হয় এবং বিশেষ্য বা পরপদের অর্থই প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকেই কর্মধারয় সমাস বলে।
- কর্মধারয় সমাসে পরপদের অর্থই প্রধান।
- ব্যাসবাক্যের মাঝের পদ লোপ পেয়ে যে সমাস হয়, তাই মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস।
যেমনঃ
- সিংহ চিহ্নিত আসন = সিংহাসন।
- চিকিৎসা বিষয়ক শাস্ত্র = চিকিৎসাশাস্ত্র।
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় না, তাই অলুক তৎপুরুষ সমাস।
যেমন:
গরুর গাড়ি = গরুর গাড়ি;
কলুর বলদ = কলুর বলদ।
গাছে পাকা = গাছপাকা (৭মী তৎপুরুষ সমাস);
গ্রাম থেকে ছাড়া = গ্রামছাড়া (৫মী তৎপুরুষ সমাস);
ধানের ক্ষেত = ধানক্ষেত (৬ষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস)।
- সমাস গঠনের সময় সাধারণত পূর্বপদের (প্রথম পদের) কারক-বিভক্তি লোপ পায়।
- এই লোপপ্রাপ্ত বিভক্তির নাম অনুসারেই তৎপুরুষ সমাসের বিভিন্ন নামকরণ (দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী ইত্যাদি) করা হয়।
- যেমন, 'বিপদকে আপন্ন = বিপদাপন্ন' - এখানে পূর্বপদ 'বিপদ'-এর সাথে যুক্ত দ্বিতীয়া বিভক্তি 'কে' লোপ পেয়েছে।
- পরপদের (শেষের পদের) সাথে কোনো বিভক্তি যুক্ত থাকে না এবং তৎপুরুষ সমাসে এর অর্থই প্রধান হিসেবে প্রতীয়মান হয়।
উপমিত ও উপমানের অভেদ কল্পনামূলক সমাসকে বলে রূপক কর্মধারয় সমাস। এ সমাসে উপমেয় পদ পূর্বে বসে এবং উপমান পদ পরে বসে। সমস্যমান পদে ‘রূপ’ অথবা ‘ই’ যোগ করে ব্যাসবাক্য গঠন করা হয়। যেমন: মন রূপ মাঝি = মনমাঝি।
- বউ ভাত পরিবেশন করে যে অনুষ্ঠানে = বউভাত (বহুব্রীহি);
- ভারকে প্রাপ্ত = ভারপ্রাপ্ত (দ্বিতীয়া তৎপুরুষ);
- গীতি বিষয়ক নাট্য = গীতিনাট্য (মধ্যপদলোপী কর্মধারয়)।
উপমান কর্মধারয় সমাস: উপমান পদের সঙ্গে সাধারণ ধর্মবাচক পদের যে সমাস হয় তাকে উপমান কর্মধারয় সমাস বলে।
» এই সমাসে একটা বিশেষণ পদ থাকে।
» কাজলকালো= কাজলের ন্যায় কালো
» কুসুমকোমল = কুসুমের ন্যায় কোমল
» তুষারশুভ্র - তুষারের ন্যায় শুভ্র।
» তুষারধবল = তুষারের ন্যায় ধবল
» রক্তলাল = রক্তের ন্যায় লাল
এখানে 'মাতাজাতি' শব্দটি সমাসের ভুল প্রয়োগ। সঠিক শব্দটি হবে 'মাতৃজাতি'। কারণ: সমাসবদ্ধ পদে 'মাতা' (মা) শব্দটি 'মাতৃ' রূপ ধারণ করে। যেমন: মাতৃস্নেহ, মাতৃভাষা, মাতৃভূমি ইত্যাদি। 'মাতা' শব্দের সাথে 'জাতি' শব্দ যুক্ত হয়ে 'মাতাজাতি' গঠন করা ব্যাকরণগতভাবে ভুল।
"সংসারসাগর" একটি রূপক শব্দ যা বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ হলো "সংসার" বা "জীবন" যা একটি বিশাল এবং গভীর সমুদ্রের মতো, যেখানে নানা ধরনের অভিজ্ঞতা, সমস্যা, এবং আনন্দ-বেদনা এসে মিলিত হয়।

আরও বিস্তারিতভাবে, "সংসার" বলতে সাধারণত মানুষের দৈনন্দিন জীবন, পরিবার, এবং সামাজিক সম্পর্কগুলিকে বোঝায়। এটি একটি বিস্তৃত প্রেক্ষাপট, যেখানে মানুষ জন্ম নেয়, বড় হয়, কাজ করে, এবং অবশেষে মারা যায়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি একটি সাগরের সাথে তুলনীয়, যা বিশাল, গভীর, এবং বিভিন্ন স্রোত ও ঢেউয়ে পরিপূর্ণ।

রূপক অর্থে, "সংসারসাগর" শব্দটি ব্যবহার করে জীবনের জটিলতা এবং অস্থিতিশীলতাকে তুলে ধরা হয়। যেমন:
"সংসারসাগরে ডুবে আছি" - এই বাক্যে জীবনের বিভিন্ন সমস্যা ও দায়িত্বের মধ্যে ডুবে থাকার অনুভূতি প্রকাশ করা হয়।
"সংসারসাগর পাড়ি দেওয়া" - এই বাক্যে জীবনের কঠিন পথ অতিক্রম করার অর্থ বোঝানো হয়।
"সংসারসাগরের ঢেউ" - এই বাক্যে জীবনের উত্থান-পতন, সুখ-দুঃখের অভিজ্ঞতা বোঝানো হয়।

সুতরাং, "সংসারসাগর" একটি শক্তিশালী রূপক যা জীবনের গভীরতা এবং অনিশ্চয়তাকে তুলে ধরে।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
- পূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয়েরই অর্থের প্রাধান্য থাকে, তবে তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।
- সামীপ্য (নৈকট্য), পর্যন্ত, অভাব, সাদৃশ্য, যোগ্যতা, পশ্চাৎ (অনু), ঈষৎ (আ) প্রভৃতি নানা অর্থে অব্যয়ীভাব সমাস হয়।
যেমন:
- ভিক্ষার অভাব = দুর্ভিক্ষ (অভাব অর্থে)।
- সংবাদ যুক্ত পত্র = সংবাদপত্র (মধ্যপদলোপী কর্মধারয়)।
"মাস্টার সাহেব" শব্দটি কর্মধারয় সমাসের উদাহরণ।

- যখন একই ব্যক্তি বা বস্তুকে দুটি বিশেষ্য পদ দ্বারা বোঝানো হয়, তখন সেটি কর্মধারয় সমাস হয়। এখানে "মাস্টার" এবং "সাহেব" উভয় শব্দই বিশেষ্য এবং একই ব্যক্তিকে নির্দেশ করছে।
অর্থাৎ, যিনি মাস্টার (শিক্ষক), তিনিই সাহেব — এক ব্যক্তি দুটি গুণে চিহ্নিত হচ্ছেন।

- এই ধরনের সমাসে প্রথম শব্দটি দ্বিতীয় শব্দের গুণ বা পরিচয় নির্দেশ করে, তবে উভয়ই একই সত্তাকে বোঝায়।
সুতরাং, "মাস্টার সাহেব" একটি কর্মধারয় সমাস।

- এইভাবে, যেমন "জজ সাহেব" = যিনি জজ, তিনিই সাহেব
- সাধারণ কর্মবাচক পদের সাথে উপমানবাচক পদের যে সমাস হয়, তাকে উপমান কর্মধারয় সমাস বলে ।
- যেমনঃ তুষার ন্যায় ধবল = তুষারধবল,
- তুষারের ন্যায় শুভ্র = তুষারশুভ্র,
- অরুণের ন্যায় রাঙা = অরুণরাঙা

- পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পেয়ে যে সমাস হয় তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে।
- তৎপুরুষ সমাসে পরপদের অর্থ প্রধানরূপে থাকে।
- তৎপুরুষ সমাস কয়েক প্রকারের হয়।
যথা- উপপদ তৎপুরুষ , অলুক তৎপুরুষ ,প্রাদি তৎপুরুষ ইত্যাদি ।
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় না, তাই অলুক তৎপুরুষ সমাস। যেমন:
গরুর গাড়ি = গরুর গাড়ি;
কলুর বলদ = কলুর বলদ।
গাছে পাকা = গাছপাকা (৭মী তৎপুরুষ সমাস);
গ্রাম থেকে ছাড়া = গ্রামছাড়া (৫মী তৎপুরুষ সমাস);
ধানের ক্ষেত = ধানক্ষেত (৬ষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস)।
- যে সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় এবং পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায় তাকেই তৎপুরুষ সমাস বলে।
- তৎপুরুষ সমাসের পূর্বপদে দ্বিতীয়া থেকে সপ্তমী পর্যন্ত যেকোনো বিভক্তি থাকতে পারে; আর পূর্বপদের বিভক্তি অনুসারে এদের নামকরণ হয়।
- পূর্বপদে পঞ্চমী বিভক্তি (হইতে, থেকে, চেয়ে ইত্যাদি) লোপ পেয়ে যে সমাস হয় তাই পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস।
- যেমন: 
লাইনচ্যুত = লাইন থেকে চ্যুত
যুদ্ধবিরতি = যুদ্ধ হতে বিরতি
স্কুলপালানো = স্কুল থেকে পালানো
মুখভ্রষ্ট = মুখ থেকে ভ্রষ্ট
প্রাণপ্রিয় = প্রাণের চেয়ে প্রিয়।
- পূর্বপদে সংখ্যাবাচক এবং পরপদে বিশেষ্য হলে এবং সমস্তপদটি বিশেষণ বোঝালে, তাকে বলে সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাস।
- যেমন: চৌ (চার) চাল যে ঘরের = চৌচালা; দশ আনন যার = দশানন।
পূর্বপদের বিভক্তির লোপে যে সমাস হয় এবং যে সমাসে পরপদের অর্থ প্রধানভাবে বোঝায় তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে ।যেমন - মধু দিয়ে মাখা = মধুমাখা , শ্রম দ্বারা লব্ধ = শ্রমলব্ধ।
“মধ্যরাত” = “মধ্য + রাত” সমাসটি সুপসুপা সমাস এর উদাহরণ। কারণ নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো এ সমাসে প্রযোজ্য:
উভয় পদই অব্যয়, এখানে “মধ্য” এবং “রাত”—দুটি উৎসর্গী শব্দই অব্যয়ী পদ (ক্রিয়া বা বিশেষণ নয়)।

পদদ্বয়ের অক্ষর বিনিময় (লঘু–সন্ন্যাস)
“রাত্রির মধ্য” বলতে “রাত্রি” + “ই” প্রীত্যয়যুক্ত “রাত্রি-র মধ্য” ধরা যায়; তবে সমাসে “রাত্রি” অক্ষরহীন রূপ “রাত” হয়ে যায়, অর্থাৎ যোগসূত্রে বিনিময়ে গুরুত্ব পায় না। উপরন্তু, “রাত্রি” শব্দের “রি” অংশ গিয়ে “রাত” রূপ নেয়—বাংলা কথ্যায় “রাত্রি”–কে ছোট করে “রাত” বলা হয়; এ রূপান্তরেই সুপসুপা সমাসের প্রক্রিয়া লক্ষণীয়।

“মধ্যরাত” রচনা পদ্ধতিতে “মধ্য” + “রাত” যোগ করে মিলিয়ে “মধ্যরাত” শব্দটি গঠিত হয়। এখানে ভিন্ন কোনো নির্দিষ্ট যোগসূত্রসূচক ছাড়া পদের সম্মিলন ঘটেছে।

মধ্যরাতের মূল ভাব “রাত্রির মধ্যভাগ”
অর্থত “রাত্রির মধ্যভাগ” → “মধ্যরাত”; মূলত “রাত্রি” + “মধ্য” এর আদলে গিয়ে উভয় অব্যয়পদ সরাসরি একত্রিত হয়ে “মধ্যরাত” রূপ নেয়।

অন্যান্য সমাসপদগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে বুঝা যায় কেন এটিকে সুপসুপা বলা হয়:
নিত্য সমাস: সাধারণত “নিত্য” (অবিচ্ছেদ্য) মানে ক্রিয়া বা বিশেষণ + অব্যয় মিলিয়ে; যেমন “জলখাবার” (“জল” + “খাবার”)—এখানে “জল” (নিপাত) + “খাবার” (নিপাত) মিলিয়ে “জলখাবার” হচ্ছে, কিন্তু শব্দগঠন ধরন আলাদা হতে পারে।

প্রাদি সমাস: প্রথম পদস্বরূপ অব্যয়, দ্বিতীয় পদস্বরূপ বিশেষ্য; তবে “মধ্য” ও “রাত” দুটোই বিশেষ্য/নিপাত, তাই এখানে প্রাদি প্রযোজ্য নয়।

অব্যয়ীভাব সমাস: যেখানে অব্যয় (নিপাত)—রকম শব্দ সম্মিলিত হয়ে বিশিষ্ট্যরূপ ধারণ করে; যেমন “বাস্তুতত্ত্ব” (“বাস্তু” (নিপাত) + “তত্ত্ব” (বিশিষ্ট্য)) ইত্যাদি। “মধ্য” ও “রাত” একত্রিত হলেও এখানে অভ্যায়ী ভাব (কার্যের নির্দেশিকা) মূল না; বরং সরাসরি মিলন।
- যে সমাসে সমস্যমান পদ দ্বারা সমাস-বাক্য হয় না, অন্য পদের দ্বারা সমস্ত পদের অর্থ প্রকাশ করতে হয়, তাকে নিত্য সমাস বলে। তদর্থবাচক ব্যাখ্যামূলক শব্দ বা বাক্যাংশ যোগে এগুলোর অর্থ বিশদ করতে হয়।
যেমন:
- অন্য দেশে = দেশান্তর
- কেবল তা = তন্মাত্র,
- অন্য গ্রাম = গ্রামান্তর,
- কেবল দর্শন = দর্শনমাত্র,
- অন্য গৃহ = গৃহান্তর,
- (বিষাক্ত) কাল (যম) তুল্য (কাল বর্ণের নয়) সাপ = কালসাপ,
- তুমি আমি ও সে = আমরা,
- দুই এবং নব্বই = বিরানব্বই।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
- নিপাতনে সিদ্ধ বহুব্রীহি কোনো নিয়মের অধীন নয়
যেমন:
- অন্তর্গত অপ যার = অন্তরীপ;
- দু দিকে অপ যার = দ্বীপ;
- পণ্ডিত হয়েও যে মূর্খ = পণ্ডিতমূর্খ।

- আশীতে (দাঁতে) বিষ যার = আশীবিষ (ব্যধিকরণ বহুব্রীহি);
- ন কেজো = অকেজো (নঞ্‌ তৎপুরুষ সমাস)।
সঠিক উত্তর: 0 | ভুল উত্তর: 0