ব্রিটিশ শাসনামল (523 টি প্রশ্ন )
- সতীদাহ প্রথা হলো হিন্দু ধর্মাবলম্বী কোন সদ্য বিধবা নারীকে স্বামীর চিতায় সহমরণ বা আত্মাহুতি দিতে বাধ্য করার এক অমানবিক প্রথা।
- রাজা রামমোহন রায় ১৮১২ সালে সতীদাহ বিরোধী সামাজিক আন্দোলন শুরু করেন।
- এপর ১৮২৮ সালে তিনি ব্রিটিশ গভর্নর লর্ড ইউলিয়াম বেন্টিংকের কাছে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ ঘোষণার জন্য আবেদন করেন।
- রাজা রামমোহন রায়ের প্রচেষ্টায় লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক ৪ ডিসেম্বর, ১৮২৯ সালে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে আইন পাস করেন।
- এর ফলে ভারতীয় হিন্দু সমাজ থেকে সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত হয়।
- ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনটি (Indian Independence Act 1947) লর্ড মাউন্টব্যাটেন কর্তৃক প্রণীত পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল।
- লর্ড মাউন্টব্যাটেন ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের সর্বশেষ ভাইসরয়।
- ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় নেতাদের সাথে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে, মাউন্টব্যাটেনকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়।
- তিনি ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দল, কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগের নেতাদের সাথে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্তে আসেন যে, ভারতকে বিভক্ত করা ছাড়া ক্ষমতা হস্তান্তর সম্ভব নয়।
- তার এই পরিকল্পনাটি "মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা" বা "৩রা জুন পরিকল্পনা" নামে পরিচিত।
- এই পরিকল্পনার ভিত্তিতেই ব্রিটিশ সংসদ ভারত স্বাধীনতা আইন পাশ করে, যার মাধ্যমে ব্রিটিশ ভারতকে বিভক্ত করে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি স্বাধীন ডোমিনিয়ন রাষ্ট্র তৈরি করা হয়।
- ১৮৫৯-৬০ সালে সংঘটিত নীল বিদ্রোহ ছিল বাংলার কৃষকদের একটি শক্তিশালী আন্দোলন, যা নীলকর সাহেবদের শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়েছিল।
- কৃষকদের উপর জোর করে নীল চাষ চাপিয়ে দেওয়া হতো এবং তার বিনিময়ে ন্যায্য মূল্য দেওয়া হতো না।
- বিদ্রোহের তীব্রতা এবং বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর সমর্থনের ফলে ব্রিটিশ সরকার বিষয়টি তদন্ত করতে বাধ্য হয়।
- ১৮৬০ সালে সরকার "নীল কমিশন" (Indigo Commission) গঠন করে।
- এই কমিশন তদন্তের পর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে নীলকরদের শোষণ, নিপীড়ন এবং অন্যায্য ব্যবস্থার চিত্র স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
- কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার একটি আইন জারি করে, যেখানে বলা হয় যে কৃষকদের নীল চাষে বাধ্য করা যাবে না এবং সমস্ত বিরোধ দেওয়ানি আদালত দ্বারা মীমাংসা করতে হবে। এর ফলে বাংলায় নীল চাষের ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে এবং নীল বিদ্রোহের অবসান ঘটে।
- ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অধীনে অবিভক্ত বাংলায় প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন স্বীকৃত হয়।
- এই আইনের আওতায় ১৯৩৭ সালে প্রথমবারের মতো আইনসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
- এই নির্বাচনের মাধ্যমেই বঙ্গীয় আইনসভার যাত্রা শুরু হয় এবং এ. কে. ফজলুল হক প্রথম মন্ত্রিসভা গঠন করেন।
- 'করেঙ্গে হয়ে মরেঙ্গে' (করব না হয় মরব)  উক্তিটি করেন— মহাত্মা গান্ধী।

- ১৯৪২ সালের ৮ই আগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলনের (ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অঙ্গ) প্রাক্কালে মহাত্মা গান্ধী মুম্বাইয়ের গোয়ালিয়া ট্যাঙ্ক ময়দানে একটি বক্তৃতা দেন।
- বক্তৃতায় তিনি স্বাধীনতার লক্ষ্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়ার আহ্বান জানান এবং "করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে" স্লোগানটি ব্যবহার করেন।
- এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের সংকল্প প্রকাশ।
- গান্ধী এই স্লোগানের মাধ্যমে জনগণকে সংগ্রামে অবিচল থাকার বার্তা দেন।
- দুদু মিয়ার আসল নাম ছিল পীর মুহসীনউদ্দীন আহমদ
- দুদু মিয়া (১৮১৯-১৮৬২) ছিলেন ফরায়েজি আন্দোলনের অন্যতম নেতা এবং হাজী শরীয়তুল্লাহর পুত্র।
- তাঁর প্রকৃত নাম মুহসীনউদ্দীন আহমদ।
- দুদু মিয়া ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের পথপ্রদর্শক, যিনি বাংলার নিপীড়িত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনসমর্থন পান।
- তিনি মক্কায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন এবং ১৮৪০ সালে বাবার মৃত্যুর পর ফরায়েজি আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।
- জমি থেকে খাজনা আদায় আল্লাহর আইনের পরিপন্থী-এ উক্তি দুদু মিয়ার।
ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন:
- ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ক্ষমতা লাভের পর সর্বপ্রথম যে আন্দোলন হয়েছিল ইতিহাসে তা ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন নামে পরিচিত।
- সময়কাল: ১৭৬০ থেকে ১৮০০
- বিদ্রোহের কারণ: ইংরেজরা ফকির-সন্ন্যাসীদের চলাচলে বাধা নিষেধ অরোপ করে এবং ভিক্ষা ও মুষ্টি সংগ্রহকে বেআইনি ঘোষণা করে।
- ফকির বিদ্রোহের নামকরণ করেন: ভারতের বড়লাট ওয়ারেন হেস্টিংস
- ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ করে: ফকির-সন্ন্যাসীরা
- ফকিরদের নেতা: মজনু শাহ্ (সুফি সাধক)
- সন্ন্যাসীদের নেতা: ভবানী পাঠক
ছিয়াত্তরের মন্বন্তর : 
- কারণ : পঙ্গপাল ও পোকার আক্রমণে ফসল নষ্ট, রাজস্ব নীতি
- সময় : ১৭৭০ সাল (বাংলা ১১৭৬ সাল)
- মৃত্যু : প্রায় ১ কোটি মানুষ (বাংলার এক তৃতীয়াংশ মানুষ মারা যায়)
- দুর্ভিক্ষের সময় দিল্লির সম্রাট ছিলেন : শাহ্ আলম
- গ্রন্থ : জন ফিক্সের ‘The Unseen World'
ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সূত্রপাত ঘটে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গকে কেন্দ্র করে।

- ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গটি কলকাতায় (সাবেক ক্যালকাটা) অবস্থিত এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম বড় সামরিক দুর্গ ছিল।
- ১৬৯৬ সালে নির্মাণ শুরু হয় এবং পরবর্তীতে ১৭৫৮ থেকে ১৭৮১ সালের মধ্যে নতুন দুর্গ নির্মিত হয়।
- এটি ব্রিটিশ শাসনের ভৌগলিক ও সামরিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।
- ১৭৫৭ সালের প্লাসির যুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয়ের পর ফোর্ট উইলিয়াম ব্রিটিশ রাজার শাসনের অঙ্গরূপ হয়ে ওঠে।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
- প্রথম পর্যায়ে, ১৬৩২ সালে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের আদেশে কাসিম খান হুগলি থেকে পর্তুগিজদের বিতাড়ন করেন।
- এটি ছিল বাংলায় পর্তুগিজ শক্তির উপর প্রথম বড় ধরনের মুঘল আক্রমণ।
- কিন্তু হুগলি থেকে বিতাড়িত হলেও, পর্তুগিজরা চট্টগ্রাম ও সন্দ্বীপে আরাকানি মগদের সাথে মিলিত হয়ে তাদের প্রভাব বজায় রেখেছিল।
- চূড়ান্তভাবে এবং সম্পূর্ণভাবে বাংলা থেকে পর্তুগিজদের বিতাড়িত করেন শায়েস্তা খান।
- তিনি ১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম জয় করে পর্তুগিজ ও মগ জলদস্যুদের দমন করেন।
- এই ঘটনাকেই বাংলা থেকে পর্তুগিজ শক্তির চূড়ান্ত বিলুপ্তি হিসেবে ধরা হয়।
- তাই, বহু নির্বাচনী প্রশ্নের ক্ষেত্রে বা একটি নির্দিষ্ট উত্তর দেওয়ার সময় শায়েস্তা খান-এর নামই সবচেয়ে সঠিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের বিরুদ্ধে এটি ছিল প্রথম বড় আকারের সশস্ত্র প্রতিরোধ। এই বিদ্রোহের মূল কারণ ছিল ব্রিটিশদের দ্বারা ভারতীয় রাজ্যগুলি দখল, ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে হস্তক্ষেপ, এবং অর্থনৈতিক শোষণ।

ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাই এই বিদ্রোহের অন্যতম প্রধান নেত্রী ছিলেন। ১৮৫৩ সালে তাঁর স্বামী রাজা গঙ্গাধর রাও মারা গেলে ব্রিটিশরা তাঁর দত্তক পুত্রকে উত্তরাধিকারী হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং 'স্বত্ববিলোপ নীতি' (Doctrine of Lapse) প্রয়োগ করে ঝাঁসি রাজ্যটি দখল করার চেষ্টা করে। এই অন্যায়ের প্রতিবাদে তিনি বিদ্রোহে যোগ দেন। ১৮৫৮ সালে ব্রিটিশ সৈন্যরা যখন ঝাঁসি আক্রমণ করে, তখন লক্ষ্মীবাই সাহসিকতার সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি গোয়ালিয়র দখল করে নেন, কিন্তু সেখানে ব্রিটিশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করার সময় তিনি আহত হয়ে মারা যান। তাঁর সাহস, বীরত্ব এবং দেশপ্রেমের জন্য তিনি ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন প্রতীক হয়ে রয়েছেন।


যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (ডিসেম্বর ৭, ১৮৭৯ – সেপ্টেম্বর ১০, ১৯১৫) ছিলেন একজন ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী নেতা। তিনি "বাঘা যতীন" নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। একটি বাঘকে শুধুমাত্র একটি ছোরা দিয়ে একাই হত্যা করার পর তাকে এই উপাধি দেওয়া হয়।

যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন যুগান্তর দলের অন্যতম প্রধান নেতা। তিনি ভারতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির সহায়তায় ভারতে একটি সশস্ত্র অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেছিলেন, যা "হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র" নামে পরিচিত। ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর উড়িষ্যার বালেশ্বরে ব্রিটিশ পুলিশের সাথে এক সম্মুখ যুদ্ধে তিনি গুরুতর আহত হন এবং পরের দিন বালাসোর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

 


ক্ষুদিরাম বসু ছিলেন একজন ভারতীয়-বাঙালি বিপ্লবী যিনি ভারতের ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন। ফাঁসির সময় তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর, ৭ মাস এবং ১১ দিন, যা তাঁকে ভারতের কনিষ্ঠতম বিপ্লবী হিসেবে পরিচিত করে তোলে। 

১৯০৮ সালের ১১ই আগস্ট মুজফফরপুর জেলে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।  তিনি এবং প্রফুল্ল চাকী নামে আরেক বিপ্লবী, অত্যাচারী ব্রিটিশ বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যা করার জন্য বোমা নিক্ষেপ করেছিলেন। কিন্তু ভুলবশত সেই বোমা মিসেস কেনেডি ও তাঁর কন্যার গাড়িতে লাগে এবং তাঁদের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর প্রফুল্ল চাকী গ্রেপ্তারের আগেই আত্মহত্যা করেন এবং ক্ষুদিরাম বসু গ্রেপ্তার হন। বিচারে দুজন মহিলাকে হত্যা করার জন্য তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।


রাসবিহারী বসুর নেতৃত্বে ১৯৪২ সালে ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগ গঠিত হয় এবং ভারতীয় যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে, ১৯৪৩ সালের ২১শে অক্টোবর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে এই বাহিনী পুনর্গঠিত হয় এবং তিনি সিঙ্গাপুরে স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী সরকার (আর্জি হুকুমত-এ-আজাদ হিন্দ) প্রতিষ্ঠা করেন। এই বাহিনীর মূল লক্ষ্য ছিল জাপানের সহায়তায় ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতকে মুক্ত করা।
পলাশী যুদ্ধে (১৭৫৭ খ্রিঃ) পরাজয়ের ফলে ভারতে যে ঘটনা ঘটে তা হলো:

ব্রিটিশদের ক্ষমতা বৃদ্ধি: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের রাজনীতিতে প্রধান শক্তি হিসেবে উঠে আসে।
মোগল শাসনের দুর্বলতা: মীর জাফরের পৃষ্ঠপোষকতায় ব্রিটিশরা বাংলার নবান্ন ও অন্যান্য অর্থনৈতিক সম্পদ দখল করতে পারে।
সামরিক ও রাজনৈতিক প্রভাব: বাংলার শাসক শাহীদ মৃনালিনী ও মুকুটচ্যুত রাজারা ব্রিটিশদের কাছে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
ভূমি ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন: কোম্পানি বাংলার রেভিনিউ সংগ্রহের ক্ষমতা পান (ডিওরেশন), অর্থাৎ রাজস্ব সংগ্রহে ব্রিটিশদের আধিপত্য।
- রাজশাহী অঞ্চলের সর্বপ্রাচীন ইমারত হল বড়কুঠি।
- বড়কুঠি সাহেব বাজার এবং রাজশাহী কলেজের দক্ষিণে এবং পদ্মা নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থিত।
- ইষ্টক নির্মিত এবং সমতল ছাদ বিশিষ্ট এই ইমারতটি আঠারো শতকের প্রথমার্ধে (১৭২৫ সনের পূর্বে) ওলন্দাজ রেশম ব্যবসায়ীদের নির্মিত এক উল্লেখযোগ্য কীর্তি।
- কুঠিটির বহির্ভাগ এর দৈর্ঘ্য ২৪ মিটার (৮২-০) এবং প্রস্থ ১৭.৩৭ (৬৭-০)।
- এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন ছিল।
- প্রথমে এটি ওলন্দাজ বা ডাচদের ব্যবসা কেন্দ্র ছিল।
- ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ডাচরা ভারতে তাদের কর্মকাণ্ড গুটিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
- ১৮১৪ সালে ইংরেজদের সাথে একটি চুক্তি করে বড়কুঠিসহ ভারতের সব ব্যবসা কেন্দ্র ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে হস্তান্তর করে।
- প্রথম ডেনমার্ক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠন করা হয় ১৬১৬ সালে রাজা ক্রিশ্চিয়ান চতুর্থের শাসনকালে।
- কোম্পানিটি ভারতে বাণিজ্যের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর মাধ্যমে ডেনমার্ক উপমহাদেশে বাণিজ্য শুরু করে।
- প্রথম অভিযান ১৬১৮ সালে শুরু হয় এবং ১৬২০ সালে তারা ত্রিনকমালেতে একটি বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন করে।
- কোম্পানি ১৬১৬ থেকে ১৬৫০ সাল পর্যন্ত কার্যক্রম চালায়, পরে ১৬৭০ সালে দ্বিতীয় কোম্পানি গঠন করা হয়।
- হিন্দু বিধবা পুনর্বিবাহ আইন, ১৮৫৬ (The Hindu Widows' Re-marriage Act, 1856) লর্ড ক্যানিং-এর আমলে পাস হয়েছিল।

- যদিও এই আইনের খসড়া তৈরি করেছিলেন লর্ড ডালহৌসি, কিন্তু তিনি পদত্যাগ করার পর লর্ড ক্যানিং ভারতের গভর্নর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং তার কার্যকালেই এই আইনটি কার্যকর হয়।

- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ এই আইনটি প্রণীত হয়েছিল, যা ভারতীয় সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সংস্কার ছিল।
- ১৭৬৪ সালে বিহারের বক্সার নামক স্থানে বাংলার নবাব মীর কাশিম, মুঘল সম্রাট শাহ আলম এবং অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলার সম্মিলিত বাহিনীর সাথে মেজর মনরো নেতৃত্বাধীন ইংরেজ বাহিনীর যুদ্ধ হয় যা বক্সারের যুদ্ধ নামে পরিচিত।
- এই যুদ্ধে ইংরেজদের নিকট মীর কাশিমের সম্মিলিত বাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়।
- বক্সারের যুদ্ধকে পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজদের নিকট হারানো বাংলার স্বাধীনতাকে পুনরুদ্ধারের শেষ প্রচেষ্টা বিবেচনা করা হয়।
- এই যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে বাংলার নামমাত্র টিকে থাকা স্বাধীনতা পুরোপুরি বিনষ্ট হয়।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
- ৩ জুন, ১৯৪৭ সালে বৃটিশ ভারতের সর্বশেষ ভাইসরস লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারত ভাগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
- ১৮ জুলাই, ১৯৪৭ সালে মাউন্টব্যাটেন এর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টে 'ভারত স্বাধীনতা আইন পাশ হয়। এই আইনের ফলে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়।
- ফলে ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত নামে দুটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়।
- ভারত ভাগের সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ক্লিমেন এ্যাটলি (Clement Attlee)।
- তিনি ১৯৪৫-৫১ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
- তিতুমীর (আসল নাম মীর নিসার আলী) ছিলেন একজন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী এবং সংস্কারক।
- তিনি ওয়াহাবি আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ইসলাম ধর্মের সংস্কার এবং মুসলিম সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার দূর করার জন্য কাজ শুরু করেন।
- তার এই আন্দোলন 'তরীকায়ে মোহাম্মদীয়া' নামে পরিচিতি লাভ করে, যার অর্থ "মুহাম্মদের (সাঃ) পথ"।
- এটি মূলত ধর্মীয় সংস্কারের পাশাপাশি ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসন এবং স্থানীয় জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধ আন্দোলন হিসেবেও গড়ে উঠেছিল।
- এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে তিনি বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন এবং ব্রিটিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।
- বিদরার যুদ্ধ (Battle of Bidar) ১৭৫৯ সালে সংঘটিত হয়েছিল, যেখানে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাহিনী ওলন্দাজ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয়ী হয়।
- এই যুদ্ধে ওলন্দাজরা ইংরেজদের কাছে পরাজিত হয়, যা ইংরেজদের ভারতীয় উপমহাদেশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ ইংরেজদের প্রথম বড় বিজয় ছিল, কিন্তু বিদরার যুদ্ধ ১৭৫৯ সালে ওলন্দাজদের বিরুদ্ধে ইংরেজদের বিজয় চিহ্নিত করে।
- র‍্যাডক্লিফ লাইন ১৯৪৭ সালে স্থির করা হয়েছিল।
- এটি ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশ ও বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিকে বিভাজন করে নবগঠিত ভারত ও পাকিস্তানের সীমানা নির্ধারণকারী রেখা।
- ১৭ই আগস্ট ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত বিভাজন সংক্রান্ত এই সীমানা নির্ধারণ রেখার অন্তিম পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়।
- এই রেখা স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফের নামে নামাঙ্কিত, যিনি প্রায় ৮.৮ কোটি মানুষের বসতি ও সর্বমোট ১,৭৫,০০০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত বাংলা ও পাঞ্জাব উভয় প্রদেশের জনবিন্যাসগত সুষ্ঠু বিভাজন পরিকল্পনার যুগ্মসভাপতি হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন।
- বর্তমানে এই রেখাটির পশ্চিমভাগ ভারত–পাকিস্তান সীমান্ত ও পূর্বভাগ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত নামে পরিচিত।
- ভারতে ইউরোপীয়দের মধ্যে প্রথম দুর্গ স্থাপন করেছিল পর্তুগিজরা।
- ১৫০৫ সালে পর্তুগিজ নাবিক ফ্রান্সিসকো দ্য আলমেইদা কেরালার কোচিতে প্রথম ইউরোপীয় দুর্গ (ফোর্ট সেন্ট অ্যাঞ্জেলো) নির্মাণ করেন।
- এরপর ১৫১০ সালে পর্তুগিজরা গোয়াতে দুর্গ নির্মাণ করে, যা তাদের ভারতীয় উপমহাদেশে প্রধান ঘাঁটি হয়ে ওঠে।
- অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তি যেমন ডাচ, ফরাসি এবং ব্রিটিশরা পরবর্তী সময়ে ভারতে আসে এবং তাদের দুর্গ নির্মাণ করে।
- সিপাহী বিদ্রোহ চলাকালীন ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন লর্ড ক্যানিং।

- ব্রিটিশ ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল এবং প্রথম ভাইসরয় ছিলেন লর্ড জন ক্যানিং।
- তিনি ১৮৫৬ থেকে ১৮৬২ সাল পর্যন্ত ভারতের গভর্নর জেনারেল হিসেবে কাজ করেন এবং ১৮৫৮ সালের ১ নভেম্বর থেকে ভারতে প্রথম ভাইসরয় হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
- তাঁর প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের সূচনা।
- লর্ড ক্যানিং বিদ্রোহটি দমন করেন এবং এর পর ১৮৫৮ সালে পার্লামেন্টারি আইন পাস করা হয়।

উলেখ্য,
- লর্ড ক্যানিং ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথমবারের মতো কাগজের মুদ্রা প্রচলন করেন, এর আগে স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা ব্যবহৃত হতো।
- তিনি উপমহাদেশে প্রথম বাজেট ঘোষণা করেন।
- ১৮৬১ সালে লর্ড ক্যানিং পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করেন।
» গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা - শ্রী গুপ্ত।
» গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা - প্রথম চন্দ্রগুপ্ত।
» গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা - সমুদ্রগুপ্ত (তাঁকে প্রাচীন ভারতের নেপোলিয়ন উপাধি দিয়েছেন ড. ভিনসেন স্মিথ) ।
» দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের উপাধি ছিল - বিক্রমাদিত্য
» গুপ্ত সাম্রাজ্যের রাজধানী - পাটালিপুত্র।
» ২য় চন্দ্রগুপ্তের সময়ে ভারত বর্ষে আসেন - চীনা পরিব্রাজক ফা-হিয়ান।
» গুপ্ত সাম্রাজ্য ধ্বংস হয় - হুন শক্তির হতে। (হুন হচ্ছে মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতি)
» গুপ্ত সাম্রাজ্যের পন্ডিতগণ হলে - আর্যভট্ট, কালীদাস, বিষ্ণুশর্মা, বরাহমিহির।
» অহ্নিক ও বার্ষিক গতি নির্ণয় করেন - আর্যভট্ট
» গণিত শূন্যের প্রচলন করেন - আর্যভট্ট
» আজন্তার গুহাচিত্র -গুপ্তযুগের সৃষ্টি।
» গুপ্ত যুগের কবি ছিলেন - কালিদাস।
- বিট্রিশ শাসনামলে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, মধ্য প্রদেশ ও আসামের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল বাংলা প্রদেশ বা বাংলা প্রেসিডেন্সি।
- এর আয়তন বড় হওয়ায় ১৯০৩ সালে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা গৃহীত হয়।
- ১৯০৪ সালে ভারত সচিব এটি অনুমোদন করেন এবং ১৯০৫ সালের জুলাই মাসে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা প্রকাশিত হয়।
- এ পরিকল্পনায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, আসাম, জলপাইগুড়ি, পার্বত্য ত্রিপুরা ও মালদহ নিয়ে গঠিত হয় পূর্ব বাংলা ও আসাম নামে নতুন প্রদেশ।
- এ প্রদেশ গঠনকালে ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় ছিলেন লর্ড কার্জন।
- বঙ্গভঙ্গ রদের সময় গভর্নর ছিলেন লর্ড হার্ডিঞ্জ।
- ১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর ভারতের ভাইসরয় লর্ড কার্জনের আদেশে ১ম বঙ্গভঙ্গ সম্পন্ন হয়।কিন্তু ১৯১১ সালে, প্রচণ্ড গণআন্দোলনের ফলশ্রুতিতে বঙ্গভঙ্গ রহিত হয়।

- দ্বিতীয়বার বঙ্গভঙ্গ হয় ১৯৪৭ সালে। এর ফলে পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানে এবং পশ্চিমবঙ্গ ভারতে যুক্ত হয়।

- এই পূর্ববঙ্গই পরবর্তীকালে পাকিস্তানের কাছ থেকে এক রক্তক্ষয়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে ও বাংলাদেশ নামক একটি নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি করে।

- বঙ্গভঙ্গের পরিপ্রেক্ষিতে যখন হিন্দু সমাজের একটি বৃহৎ অংশ এর বিরোধিতা করে স্বদেশী আন্দোলনের সূচনা করেছিল, তখন মুসলমানদের মধ্যে এই প্রস্তাবটি সম্পর্কে দ্বিধাবিভক্ত মনোভাব দেখা যায়।
- শুরুতে অনেক মুসলিম নেতা ও সংগঠন বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করলেও, পরবর্তীতে অনেকেই এর পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন।
- এরই ধারাবাহিকতায়, মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটি ১৯০৫ সালে সাতজন প্রভাবশালী মুসলিম নেতার স্বাক্ষরযুক্ত একটি প্রকাশ্য লিখিত ঘোষণা প্রকাশ করে। এই ঘোষণার মাধ্যমে, তারা সমগ্র মুসলিম সমাজকে শর্তহীনভাবে বঙ্গভঙ্গ সমর্থনের আহ্বান জানায়।
- মোসলেম ক্রনিকল শুরুতে বিভক্তির বিরোধিতা করেছিল, পরে মত পরিবর্তন করে।

উৎস- বাংলাপিডিয়া।


ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
- ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পর বেশিরভাগ মুসলমান বঙ্গভঙ্গের পক্ষেই মত দেয়, কারণ তারা মনে করেছিল নতুন পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশে মুসলমানদের উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হবে। তবে মুসলমান সমাজের একটি উদারপন্থী অংশ তখনও হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের পক্ষে ছিল এবং বঙ্গভঙ্গকে ভারতের জাতীয় ঐক্যবিরোধী মনে করত।
- এই ধারার অন্যতম মুখ্য নেতা ছিলেন খাজা আতিকুল্লাহ, যিনি ছিলেন নওয়াব খাজা সলিমুল্লাহর সৎ ভাই।
- তিনি ১৯০৬ সালের কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গভঙ্গ বর্জনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

উৎস- বাংলাপিডিয়া
সঠিক উত্তর: 0 | ভুল উত্তর: 0