চুম্বক (29 টি প্রশ্ন )

চুম্বকত্ব এমন একটি ধর্ম যা পদার্থের মধ্যে বিদ্যমান চুম্বকীয় বল বা আকর্ষণের সাথে সম্পর্কিত। এটি রাসায়নিক ধর্ম নয় কারণ এটি পদার্থের রাসায়নিক গঠন বা প্রতিক্রিয়ার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। এছাড়া, এটি জৈবিক ধর্মও নয় কারণ এটি জীববিজ্ঞান বা জীবদেহের গুণাবলীর বিষয় নয়। পরমাণু ধর্ম বলতে সাধারণত পরমাণুর অভ্যন্তরীণ গঠন বা গুণাবলী বোঝানো হয়, কিন্তু চুম্বকত্ব মূলত পারমাণবিক বা ইলেকট্রনের গতিবিধির কারণে হলেও এটি ভৌত ধর্মের আওতাধীন। তাই চুম্বকত্ব হল ভৌত ধর্ম।
- প্যারাচুম্বকীয় বৈশিষ্ট্য প্রদর্শিত হয় সেইসব পদার্থে যাদের অযুগ্ম ইলেকট্রন (unpaired electrons) থাকে।
- এই অযুগ্ম ইলেকট্রনগুলির নিজস্ব চৌম্বক মুহূর্ত থাকে এবং একটি বাহ্যিক চৌম্বক ক্ষেত্রে সেগুলির কিছুটা সারিবদ্ধতা দেখা যায়, যার ফলে পদার্থটি চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা সামান্য আকৃষ্ট হয়।
- অক্সিজেন (O₂): আণবিক অরবিটাল তত্ত্ব (Molecular Orbital Theory) অনুসারে, অক্সিজেন অণুর দুটি অ্যান্টিবন্ডিং আণবিক অরবিটালে (antibonding molecular orbitals) দুটি অযুগ্ম ইলেকট্রন থাকে। এই অযুগ্ম ইলেকট্রনগুলির উপস্থিতির কারণে অক্সিজেন প্যারাচুম্বকীয় বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে।
✔ চৌম্বকক্ষেত্রের কোনো চৌম্বক আবেশ এবং চৌম্বক প্রবেশ্যতার অনুপাতকে চৌম্বক প্রাবল্য বা তীব্রতা বলে।
✔ চুম্বাকায়ন বলের প্রভাব সরিয়ে নেওয়ার পরেও কোনো চৌম্বব পদার্থের মধ্যে উৎপন্ন চুম্বকত্ব বজায় রাখার ক্ষমতাকে চৌম্বক ধারকতা বলে।
✔ যে তাপমাত্রায় কোনো চৌম্বক পদার্থের চুম্বকত্ব সম্পূর্ণ নষ্ট হয় তাকে কুরি তাপমাত্রা বলে।
✔ চুম্বকায়ন বলের প্রভাব সারিয়ে নেওয়ার পর চৌম্বক পদার্থে যে চুম্বকায়ন মাত্রা অবশিষ্ট থাকে তাকে রিমেনেন্স বলে।
● যে সকল পদার্থকে চৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে পদার্থের মধ্যে দূর্বল চুম্বকত্ব সৃষ্টি হয় এবং এরা চৌম্বক ক্ষেত্র থেকে সরে যায় অর্থাৎ সৃষ্ট চুম্বকায়নের অভিমুখ বহিঃচৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখের বিপরীত দিকে হয়, এদেরকে ডায়া চৌম্বক পদার্থ বলে। পানি, সোনা, রূপা, তামা, বিসমাথ হলো ডায়া চৌম্বকের উদাহরণ।

● প্যারাচৌম্বক হলো- অ্যালুমিনিয়াম, প্লাটিনাম, এন্টিমনি, অক্সিজেন।

● ফেরোচুম্বক হলো- লোহা, ইস্পাত।
- চৌম্বকক্ষেত্র অপসারিত হলেও যে কৃত্রিম চুম্বকের চুম্বকত্ব বিলুপ্ত হয় না,তাকে স্থায়ী চুম্বক বলে।
- স্থায়ী চুম্বক তৈরিতে ইস্পাত, এলনিকো সংকর, ফেরাইট নামক যৌগিক পদার্থ ব্যবহ্নত হয়।
- টেপ রেকর্ডার এবং কম্পিউটারের স্মৃতির ফিতায় সিরামিক চুম্বক ব্যবহ্নত হয়।এটি একটি স্থায়ী চুম্বক।এটি আয়রন অক্সাইড বা বেরিয়াম অক্সাইডের মিশ্রণে তৈরি যৌগিক পদার্থ।
- চুম্বকীয় পদার্থের চুম্বকত্ব মূলত ইলেকট্রনের গতি এবং ঘূর্ণনের (spin) কারণে তৈরি হয়।
- ইলেকট্রন একটি ঋণাত্মক আধানযুক্ত কণা, যা পরমাণুর কেন্দ্রের চারপাশে ঘূর্ণায়মান থাকে।
- ইলেকট্রনের এই গতি এবং নিজস্ব ঘূর্ণন (spin) একটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে।

চুম্বকত্ব তৈরির প্রক্রিয়া:

- ইলেকট্রনের গতি:
ইলেকট্রন যখন পরমাণুর কেন্দ্রের চারপাশে ঘূর্ণায়মান থাকে, তখন এটি একটি ছোট চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে।

- ইলেকট্রনের স্পিন:
ইলেকট্রনের নিজস্ব ঘূর্ণন বা স্পিনও একটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে।

- পরমাণুর চৌম্বক দ্বিমেরু:
কোনো পদার্থে যদি ইলেকট্রনগুলোর স্পিন এবং গতি সুনির্দিষ্টভাবে সাজানো থাকে, তবে পদার্থটি চৌম্বকীয় বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। উদাহরণস্বরূপ, লোহা, নিকেল, এবং কোবাল্টের মতো পদার্থে ইলেকট্রনগুলোর স্পিন একই দিকে থাকে, যা তাদের চুম্বকীয় করে তোলে।
- চুম্বকীয় রেখা বা চুম্বকীয় বলরেখা হলো চুম্বকের চারপাশে চুম্বকীয় ক্ষেত্রের দৃশ্যমান পথ।
- এই রেখাগুলো চুম্বকের বাইরে উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরুর দিকে প্রবাহিত হয় এবং চুম্বকের ভেতরে দক্ষিণ মেরু থেকে উত্তর মেরুর দিকে প্রবাহিত হয়।
- তাই, চুম্বকীয় রেখাগুলো চুম্বকের বাইরে দক্ষিণ মেরুতে প্রবেশ করে এবং উত্তর মেরু থেকে বের হয়। এটি চুম্বকের একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য।

চুম্বকীয় রেখার বৈশিষ্ট্য:
- চুম্বকীয় রেখাগুলো উত্তর মেরু থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ মেরুতে শেষ হয়।
- চুম্বকের ভেতরে এগুলো দক্ষিণ মেরু থেকে উত্তর মেরুর দিকে প্রবাহিত হয়।
- এই রেখাগুলো কখনো একে অপরকে অতিক্রম করে না।
- চুম্বকের মেরুতে চুম্বকীয় রেখার ঘনত্ব সর্বাধিক থাকে।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন

যে সকল তড়িৎযন্ত্রের ক্ষণস্থায়ী চুম্বকের প্রয়োজন হয় অর্থ্যাৎ ব্যবহারকালে চুম্বকত্বের বারবার পরিবর্তনের দরকার হয়, সে সকল যন্ত্রে অস্থায়ী চুম্বক ব্যবহার হয়। যেমন, বৈদ্যুতিক কলিং বেল, ক্রেন, ট্রান্সফর্মারের কোর, টেলিফোনের ডায়াগ্রাম ইত্যাদি। উৎসঃ একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর পদার্থ বিজ্ঞান (২য় পত্র) বোর্ড বই।
যে সকল পদার্থ চুম্বক দ্বারা আকৃষ্ট হয় এবং চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবিত হয় তাদের পদার্থ বলে । যেমন: কাঁচা লৌহ, ইস্পাত, কোবাল্ট ইত্যাদি



 

সিরামিক চুম্বক ফেরাইট নামে পরিচিত



-প্রাকৃতিক চুম্বককে পূর্বে লোড স্টোন বলা হত।
-লোড স্টোন হলো একটি খনিজ যা চুম্বকের মতো আচরণ করে।
-এটি ম্যাগনেটাইট নামে একটি খনিজ থেকে তৈরি।
-লোড স্টোনকে প্রাচীনকাল থেকেই চুম্বক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে।
যে চুম্বকের চুম্বকত্ব মুহূর্তের মধ্যে হারিয়ে যায় তাকে অস্থায়ী চুম্বক বলে। বিভিন্ন বৈদ্যুতিক মেশিন ও সরঞ্জাদি যেমনঃ মোটর, জেনারেটর, বৈদ্যুতিক পাখা, অ্যামিটার, ভোল্টমিটার, বৈদ্যুতিক কলিংবেল, ট্রান্সফরমার ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

ফ্রিতে ২ লাখ প্রশ্নের টপিক, সাব-টপিক ভিত্তিক ও ১০০০+ জব শুলুশন্স বিস্তারিতে ব্যাখ্যাসহ পড়তে ও আপনার পড়ার ট্র্যাকিং রাখতে সাইটে লগইন করুন।

লগইন করুন
 

∎টেপ রেকর্ডার ও কম্পিউটারের স্মৃতির ফিতায় সিরামিক চুম্বক বহুল ব্যবহৃত হয়.




 

ম্যাগনেটার (ইংরেজি ভাষায়: Magnetar) এক ধরনের নিউট্রন তারা যাদের চৌম্বক ক্ষেত্র অত্যন্ত শক্তিশালী। ম্যাগনেটারের ক্ষয়ের কারণে মহাবিশ্বে অতি উচ্চ শক্তির তড়িচ্চুম্বকীয় বিকিরণের উৎপত্তি ঘটে। মূলত এক্স রশ্মি এবং গামা রশ্মির বিকিরণ ঘটে। ১৯৯২ সালে রবার্ট ডানকান এবং ক্রিস্টোফার টমসন সর্বপ্রথম এই বস্তুগুলোর উৎপত্তি ও বিবর্তন বিষয়ক তত্ত্ব আবিষ্কার করেন। কিন্তু ম্যাগনেটার থেকে আসা উচ্চ শক্তির গামা রশ্মি বিস্ফোরণ প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল ১৯৭৯ সালের ৫ই মার্চ। অবশ্য তখন কেউ বুঝতে পারেননি যে সেটা ম্যাগনেটার থেকে এসেছে। এর পরের কয়েক দশক জুড়ে স্বয়ংক্রিয় কোমল গামা নিক্ষেপক এবং ব্যতিক্রমী এক্স রশ্মি পালসারের কারণ হিসেবে ম্যাগনেটার প্রকল্প জনপ্রিয় হয়ে উঠে। ২০০৪ সালের ২৭শে ডিসেম্বর বিজ্ঞানীরা প্রথম ম্যাগনেটার থেকে আসা গামা রশ্মি বিকিরণ শনাক্ত করেন। এবার তারা জানতেন বিকিরণ কোথা থেকে আসছে।



 

∎ইস্পাত:

ইস্পাত একটি লোহা ও কার্বনের সংকর যাতে মান ভেদে মোট ওজনের ০ .২% থেকে ২.১% কার্বন থাকে। ম্যাংগানিজ, ক্রোমিয়াম, ভ্যানাডিয়াম এবং ট্যাংস্টেন লোহার সাথে ব্যবহৃত হলেও কার্বন সবচেয়ে সাশ্রয়ী। লোহার সাথে এই ধাতুগুলো যুক্ত হয়ে লোহার দৃঢ়তা বৃদ্ধি করে। নিন্ম গলনাংক ও ঠালাই যৌগ্যতার জন্য উচ্চ কার্বনযুক্ত সংকর ঠালাই লোহা (কাস্ট আয়রণ) নামে পরিচিত।



 

তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণ বা তড়িচ্চুম্বকীয় বিকিরণ বা তাড়িতচৌম্বক বিকিরণ শক্তির একটি রূপ যা শূণ্যস্থানের মধ্য দিয়ে স্বচালিত তরঙ্গের রূপে সঞ্চালিত হতে সক্ষম। তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গকে অনুপ্রস্থ তরঙ্গ বা আড়-তরঙ্গের রূপে কল্পনা করা যায় যার একটি তড়িৎ ও একটি চুম্বকীয় উপাংশ আছে। এই উপাংশদুটি পরস্পরের সাথে লম্বভাবে অবস্থান করে এবং উভয়ই মূল তরঙ্গের সঞ্চরণ পথের সাথে লম্বভাবে কম্পিত হয় বা কাঁপে । তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণকে কম্পাংকের পার্থক্যের ভিত্তিতে নানা ভাগে ভাগ করা যায় যেমন: বেতার তরঙ্গ, মাইক্রোওয়েভ, অবলোহিত রশ্মি, দৃশ্যমান আলো, অতিবেগুনী রশ্মি, রঞ্জন রশ্মি (এক্স রে), এবং গামা রশ্মি। পদার্থের সাথে তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণের মিথস্ক্রিয়া প্রমাণ করে যে এটি শক্তি ও ভরবেগ বহন করে।|


যে সব পদার্থ চুম্বক পদার্থে পরিণত করা যায় বা চুম্বক দ্বারা আকৃষ্ট বা বিকৃষ্ট হয় তাদেরকে চৌম্বক পদার্থ বলে। কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, লোহা, নিকেল ইত্যাদি চৌম্বক পদার্থের উদাহরণ। এসব পদার্থ চুম্বক দ্বারা আকৃষ্ট বা বিকৃষ্ট হয়। অপরদিকে রুপা,সোনা,কাচ,তামা,পিতল,পারদ,বিসমাথ,ইত্যাদি অচৌম্বক পদার্থ।

সঠিক উত্তর: 0 | ভুল উত্তর: 0